কুয়েতকে হারিয়ে নবমবার সাফ চ্যাম্পিয়ন ভারত

খেলাধুলা ডেস্ক

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে শেষ হাসি হাসল ভারত। নির্ধারিত সময়ে খেলার ফল ছিল ১-১। টাইব্রেকারে শেষ শটটি নিতে গিয়েছিলেন কুয়েত অধিনায়ক। সেই শটটি রুখে দেন গুরপ্রীত সিং সান্ধু। এতেই টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জয় ভারতের। ইম্ফলে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট, ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, ট্রফির হ্যাটট্রিক ভারতের। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ১৩ বার ফাইনাল খেলে নবম ট্রফি।

ফাউলের দিক থেকে যদি কোনও ফাইনাল ম্যাচকে সবার আগে রাখা হয় সেই তালিকায় উপরের দিকে জায়গা করে নেবে ২০২৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। ভারত ও কুয়েত দুই দলই প্রচুর ফাউল করল। নির্ধারিত সময়ে ভারত মোট ফাউল করে ২০টি ও কুয়েত করে ১০টি। রেফারি সঠিক গতিতে হলুদ কার্ড দেখালে হয়ত দুই দলের অর্ধেক প্লেয়ারই উঠে যেতেন।

আরও পড়ুন>> দেশের ১০ জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয় কুয়েত। এদিনের ফাইনালে ম্যাচের ১৪ মিনিটে কুয়েতকে এগিয়ে দিয়েছিলেন শাবিব আল খালদি। ৩৮ মিনিটে ভারতের হয়ে সমতা ফেরান লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে। বর্ষসেরা ফুটবলার হিসেবে এদিনই ছাংতের নাম ঘোষণা করেছে এআইএফএফ।

প্রথমার্ধ ১-১ গোলে শেষ হওয়ার পর দুই দলের থেকে আরও বেশি আক্রমণাত্মক ফুটবল আশা করেছিলেন সমর্থকরা। কিন্তু ফুটবল খেলার দিক থেকে আক্রমণের ঝাঁঝ যেমন বাড়ে, সেইসঙ্গে বাড়ে ফাউলের দিক থেকে। দুই দলের প্লেয়ারই একেরপর এক কঠিন ট্যাকেল করে যান। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এগিয়ে থেকে শুরু করে ভারত। ৪৮ মিনিটের মাথায় পুজারি একটি পাস বাড়ান তবে সুনীল সেটাকে গোল করতে পারেননি। এরপর ৬০ মিনিট পর্যন্ত আক্রমণ চালিয়ে যায় ভারত। আকাশ মিশ্র, সামাদরা একেরপর এক আক্রমণ তুলতে থাকেন। কিন্তু আটকে যায় কুয়েতের ডিফেন্সে।

অন্যদিকে সুযোগ খুঁজতে থাকে কুয়েত। কিন্ত ভারতের ডিফেন্সে আটকে যায়। ৬৩ মিনিটের মাথায় সুযোগ পান ছাংতে। এরপর অনিরুদ্ধ থাপা ও ছাংতের জুটিতে ভালোভাবে ম্যাচের হাল ধরে ভারত। তবে ফিনিশিংয়ের অভাব দেখা যাচ্ছিল। নয়ত ফাউল হচ্ছিল। ফলে নির্ধারিত সময়ে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। ৯০ মিনিট শেষ হয় ১-১ গোলেই।

এরপর ম্যাচ যায় এক্সট্রা টাইমে তবে সেখানেও গোল হয়নি। বরং প্লেয়ারদের চোট আঘাতের পরিমাণ বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত গরম আর ম্যাচের ধকল দেখা যাচ্ছিল প্লেয়ারদের চোখেমুখে। এরপর ম্যাচ গড়়ায় টাইব্রেকারে। সেমিফাইনালের পর ফাইনাল ম্যাচও গড়াল টাইব্রেকারে। শেষপর্যন্ত টাইব্রেকারে ভাগ্য নির্ধারিত হয়।

টাইব্রেকারে ভারতের হয়ে গোল করেন সুনীল, সন্দেশ ঝিঙ্ঘন, লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতে এবং শুভাশিস বোস। সাাডেন ডেথে ভারতের গোলদাতা মহেশ সিংহ। কুয়েতের প্রথম শট-ই আটকে দেন গুরপ্রীত। তাতে আরও বেশি চাঙ্গা হয়ে ওঠেন সমর্থকেরা। কিন্তু ভারতের হয়ে টাই ব্রেকারের চতুর্থ শটটি নিতে গিয়ে দলকে চাপে ফেলে দেন উদান্ত সিংহ। বারের উপর দিয়ে চলে যায় তার শট। এর ফলে সমতায় ফেরার সুযোগ পায় কুয়েত। টাই ব্রেকার শেষ হয় ৪-৪ গোলে। সাডেন ডেথের প্রথম শটে মহেশ ভারতকে এগিয়ে দেওয়ার পর গুরপ্রীত কুয়েতের প্রথম শট রুখে দিয়ে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করলেন।

টুর্নামেন্টের ১৪ বারের মধ্যে ৯ বার চ্যাম্পিয়ন ভারত। ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের পর এবার সাফ চ্যাম্পিয়ন ভারত। গ্যালারিতে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন ভারতের নির্বাসিত কোচ ইগর স্টিমাচ। ভারতের জয়ের পর গোটা স্টেডিয়াম এক সঙ্গে গলা মেলাল ‘বন্দেমাতরম’ গানে। সঙ্গে উড়ল জাতীয় পতাকা। সুনীলদের নিয়ে উচ্ছ্বাস ফেটে পড়ল কান্তিরাভা স্টেডিয়ামের গ্যালারি।

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us