মায়ের বুকের দুধ মহান আল্লাহর একটি বিশেষ নেয়ামত। জন্মের পর শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধই সব থেকে উপযুক্ত খাবার। ইসলামের দৃষ্টিতে মাতৃদুগ্ধ নবজাতক শিশুর জন্মগত অধিকার। যাতে কোনো কারণে এটি খর্ব না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা একমত হয়েছেন যে বুকের দুধ পান করানো মা এবং শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। যে কোন ধরণের ইনফেকশন, ডাইরিয়া, এবং বমি ভাব বন্ধ করার ক্ষেত্রে মায়ের দুধ ভালো রক্ষাকবচের কাজ করে।
শিশুর জন্য মায়ের দুধ
শিশুর জন্মের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে মায়ের বুকের দুধ দিতে হবে। মায়ের শালদুধ শিশুর জন্য খুব উপকারী। মায়ের বুক থেকে হলুদাভ ঘন-আঁটাল যে দুধ বেরিয়ে আসে তাই শালদুধ।
আরও পড়ুন…খালেদা জিয়া আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী
মাতৃদুগ্ধ পানে শিশুর স্মরণশক্তি, বুদ্ধিমত্তা, চোখের জ্যোতি, আচার-ব্যবহার, সামাজিকতা ও মানুষের প্রতি ভালোবাসার সুন্দর বহিঃপ্রকাশ হয়।
নবজাতক শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানোর প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এজন্য ধর্মীয় ফরজ বিধান রোজা পালনেও শিথিলতা আরোপ করে বলেছেন, ‘স্তন্যদানকারী ও গর্ভবতী মহিলা থেকে রমজানের রোজা রাখার বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।’ -(সুনানে আবু দাউদ)
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরেক হাদিসে বলেছেন, ‘শিশু জন্মের পরপর মায়ের বুক থেকে যে দুধ আসে তা শিশুর জন্য অত্যন্ত সুষম, উপাদেয় ও উপকারী খাবার। ’ –(সুনানে তিরমিজি)
কতদিন মায়ের দুধ খাবে শিশু?
আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারিমে নবজাতক শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানোর ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও বিধান ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি তো মানুষকে তার পিতামাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্ট স্বীকার করে গর্ভে ধারণ করে। অতঃপর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে।’ ( সূরা লোকমান, আয়াত, ১৪)
আরও পড়ুন…দুর্নীতি মামলায় রিজেন্ট সাহেদের ৩ বছরের কারাদণ্ড
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু’বছর দুধ পান করাবে।’ -(সুরা বাকারা, আয়াত, ২৩৩)
তাফসীরবিদগণ বলেন, এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, সন্তানকে দুধ পান করানো ওয়াজিব এবং আরও বোঝা গেল যে, বিশেষ ওযর ছাড়া স্তন্যদান থেকে বিরত থাকার অবকাশ নেই।
পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোচনা থেকে বুঝা যায়- শিশুকে বুকের দুধ পান করানোর সময়সীমা হলো, জন্মের পর থেকে চন্দ্র মাসের হিসাব অনুযায়ী পূর্ণ দুই বছর। শিশুর প্রয়োজনে এ সময় আরও ছয় মাস বাড়ানো যেতে পারে। আল্লাহ তায়ালা অন্য আয়াতে বলেন, ‘তাকে গর্ভধারণ করতে ও দুধ ছাড়াতে লাগে ত্রিশ মাস।’ -(সুরা আহকাফ : ১৫,মাআরিফুল কুরআন; তাফসীরে মাযহারী; কুরতুবী; জামিউ আহকামিসসিগার ১/১২৩)
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.