তালমিছরির যত পুষ্টিগুণ

বাচ্চাদের ঠাণ্ডা লাগলে মায়েরা খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন। কারণ এতে বাচ্চার খাওয়া থেকে শুরু করে ঘুম—সব কিছুতেই সমস্যা হয়ে থাকে। অনেক সময় ওষুধ, সরিষার তেল, রসুন, মধু—এগুলোও তেমন একটা কাজে আসে না। এসব ক্ষেত্রে তালমিছরি খুব কার্যকর।

♦ তালমিছরিতে প্রচুর পরিমাণে এসেনশিয়াল ভিটামিন, মিনারেলস, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফসফরাস ও অ্যামাইনো এসিড রয়েছে। একটি সহজলভ্য উপাদান ভিটামিন বি১২ও পাওয়া যায় তালমিছরিতে। তাই যারা নিরামিষজাতীয় খাবার খায়, তাদের জন্য তালমিছরি খুবই উপকারী।

♦ যাদের অ্যানিমিয়া রয়েছে, তাদের জন্য তালমিছরি খুবই উপকারী।

কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য এটি খুব বেশি উপকারী। আয়রন রক্তের লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া হাড়ের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হলো তালমিছরি।

আরও পড়ুন>> গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গভীর রাতে নির্যাতন

♦ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নানা রকম হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। হাড় ক্ষয় হয় এবং হাঁটু ব্যথা হয়ে থাকে। এ ধরনের নানা সমস্যার সঙ্গে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। সে ক্ষেত্রেও তালমিছরি খুবই উপকারী। কারণ প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়াম রয়েছে তালমিছরিতে।

এ কারণে তালমিছরি হাড় ও দাঁত শক্ত করে তোলে এবং হাড়ের নানা রকম সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

♦ মেয়েদের মেনোপজের পর হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে এবং হাড় ভাঙার সমস্যা দেখা দেয়। এই হাড় ক্ষয় রোধ করতে নিয়মিত তালমিছরি খাওয়া উচিত। বাচ্চাদেরও হাড় ও দাঁতের গঠন ঠিক রাখার জন্য তালমিছরি খাওয়াতে হবে।

♦ তালমিছরি সর্দিকাশি দূর করতে পারে। তালমিছরির রস কাশি উপশম করে এবং গলার শ্লেষ্মা নরম করে দিতে সাহায্য করে। ফলে গলায় খুসখুসে কাশির সমস্যা অনেক কমে যায়। এক টুকরা তালমিছরি মুখে নিয়ে চুষলে সর্দিকাশিতে অনেক আরাম পাবেন। কাশিতে গলায় ব্যথা শুরু হলে এক টুকরা তালমিছরি, গোলমরিচ ও মধু দিয়ে পেস্ট বানিয়ে খেতে হবে। তবে গলা ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। এ ছাড়া এক টুকরা তালমিছরি, গোলমরিচ ও আমন্ডের পেস্ট গরম দুধের সঙ্গে প্রতিদিন রাতে খেলে নাকের শ্লেষ্মার সমস্যা অনেক দূর হয়ে যাবে।

♦ তালমিছরি চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এ জন্য বাদাম, মৌরি, তালমিছরি ও গোলমরিচের গুঁড়া রোজ রাতে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে চোখের দৃষ্টি অনেক বেড়ে যাবে। এ ছাড়া কিডনির পাথর রোধ করতেও তালমিছরি সাহায্য করে থাকে। তাই কিডনি সুরক্ষিত রাখতে তালমিছরি খেতে পারেন।

♦ তালমিছরি পেটের ব্যথা উপশম করতে পারে। এ ছাড়া এটি পেটের নানা রকম সমস্যা রোধ করতে ভীষণভাবে কার্যকর। নিমপাতার সঙ্গে তালমিছরি খেলে পেটের ব্যথা কমে যায়। এ ছাড়া ধনে গুঁড়া ও তালমিছরি মিশিয়ে দুধের সঙ্গে খেতে পারলে আমাশয়জাতীয় সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।

♦ মুখের আলসার রোধ করতে পারে তালমিছরি। মুখের জ্বালা থেকে বাঁচতে তালমিছরি ও এলাচ গুঁড়া একসঙ্গে পেস্ট করে মুখের ভেতরে লাগাতে হবে। তবে মুখের আলসার অনেক কমে যাবে। অনেকেরই মাথা ব্যথার সমস্যা থাকে। চোখের জন্য মাথা ব্যথা খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার। এ জন্য আদার রসের সঙ্গে তালমিছরি মিশিয়ে খেলে সাইনাসজনিত মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তালমিছরিতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার হজমশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে থাকে।

হতবে ডায়াবেটিস রোগীরা তালমিছরি খাওয়ার ব্যবপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us