ইবিতে ভাঙচুর ও র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেডিক্যাল সেন্টার ভাঙচুর ও নবীন শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় তিনজনকে স্থায়ী এবং অপর তিনজনকে এক বছর জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

স্থায়ী বহিষ্কার শিক্ষার্থীরা হলেন- হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মিজানুর ইমন, শুভ এবং আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রেজোয়ান সিদ্দিকী কাব্য। অপরদিকে তিনজন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আকিব, সাকিব ও পুলককে এক বছর জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) উপাচার্য কার্যালয়ে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আরও পড়ুন>> সামনে এলো রাজ-বুবলীর ‘গোপন’ রহস্য

সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন, আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমানসহ ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সভাশেষে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমানকে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে মিজানুর ইমন ও শুভর অধিকতর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় বলে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং বাকি তিনজন আকিব, পুলক ও সাকিবের সংশ্লিষ্টতা কম থাকায় তাদের এক বছর করে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়াও গত ১০ জুলাই মেডিক্যাল ভাঙচুরের ঘটনায় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সঙ্গে থাকা অন্য দুই শিক্ষার্থী সালমান আজিজ, আতিক আরমান কাব্যের সরাসরি সংশ্লিষ্ট না থাকায় তাদের সতর্ক করা হয়েছে।

আত্মপক্ষ সমর্থনের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, জড়িতদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে। তাদের জবাবের প্রেক্ষিতে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

র‍্যাগিংয়ে শিকার শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমান বলেন, আমি মনে করি প্রশাসন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা এগ্রেসিভভাবে আমাকে র‍্যাগ দিয়েছিল। তাই আমি মনে করি সঠিক সিদ্ধান্তই হয়েছে। আমি চেয়েছিলাম আমার সঙ্গে যা হয়েছে আর কেউ যেন এর শিকার না হয়, তাই আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। এই সময়টাতে পরিবার আমার পাশে ছিল।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া পরিবেশ থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা সহাবস্থানে একে অপরের সহযোগিতা করবেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা শিক্ষাবান্ধব এবং র‍্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি।

এর আগে, গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর র‍্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ওই  শিক্ষার্থী। ঘটনা তদন্তে ১০ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর সাইফুল ইসলাম।

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us