উজানের পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিপাতে বাড়তে থাকা তিস্তার পানি দ্রুত কমে গিয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে আপাতত বন্যার ঝুঁকি কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে পানি কমে গিয়ে তিস্তার তীরে দেখা দিয়েছে ভাঙন।
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে বাড়িঘর ও আবাদি জমি তিস্তায় বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে বাজার, পাকা রাস্তা, মসজিদ ও স্কুলসহ শতাধিক পরিবার।
আরও পড়ুন>> যুক্তরাষ্ট্রে পরিত্যক্ত বাড়িতে মিলল ১১৫ জনের গলিত দেহ
ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থার বরাতে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) পাউবো জানিয়েছে, উজানে তিস্তা অববাহিকায় মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে তিস্তার পানি আবারও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ সময় তিস্তার পানি ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে কিংবা কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। তবে সার্বিকভাবে বন্যার ঝুঁকি কমে এসেছে।
পাউবো, কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, শুক্রবার বিকাল ৩টার প্রতিবেদন অনুযায়ী তিস্তার পানি কমে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এদিকে, তিস্তায় পানি কমলেও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে হঠাৎ করে ভাঙন বেড়েছে। উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি ও চতুরা গ্রামে তিস্তার তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া তিস্তার ভাঙনে রামহরি গ্রামে কয়েকটি পরিবারের ভিটাবাড়িসহ রামহতি ও চতুরা গ্রামের কয়েকশ’ একর আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে শতাধিক পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এ ছাড়াও ওই এলাকার কালিরহাট বাজার, মসজিদ ও পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙন হুমকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বন্যার পানি কমলেও নদীতে হঠাৎ ভাঙন বেড়েছে। মানুষের বাড়িঘরসহ কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শত শত একর আবাদি জমি ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। সামান্য জিও ব্যাগ দিয়ে এই ভাঙন ঠেকানো যাবে বলে মনে হয় না।
পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তিস্তায় ভাঙন শুরু হয়েছে। বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের স্কুল, মসজিদ, কালিরহাট বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকিতে আছে।
প্রতিরোধের বিষয়ে এই নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, আমরা ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করছি। শুক্রবার সারাদিন প্রায় ৩০০ জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাতভর জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশনা দিয়েছি। আপাতত ১২০০ জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.