জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বেপরোয়া বিমান হামলা ও বোমাবর্ষণে ফিলিস্তিনের ৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় ওসিএইচএ। সংস্থাটি বলছে, প্রাণভয়ে গাজায় মানুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সেখানে সুপেয় পানি সংকটের পাশাপাশি নানা ধরনের রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের উত্তর গাজা শহর খালি করতে বলার ঘোষণা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, এটা অবাস্তব একটা ঘোষণা।
আরও পড়ুন>> ফখরুলকে আজরাইলে আছর করেছে : ওবায়দুল কাদের
শুক্রবার উত্তর গাজার বেসামরিক ১১ লাখ মানুষকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে চলে যেতে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয় ইসরায়েল। এরপর সেখানে এক নজিরবিহীন দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এ নিদের্শনার পরই হাজার হাজার মানুষকে উত্তরাঞ্চল ছাড়তে শুরু করে। অনেকে হেঁটে রওনা হয়েছেন। মাইলের পর মাইল দীর্ঘ বাস্তুচ্যুত মানুষের সারি দেখা যায়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, গাধা ও ঘোড়ায় টানা ভ্যান, মালবাহী ও ব্যক্তিগত গাড়িতে করে আসবাব নিয়ে শহর ছাড়ছে শত শত পরিবার। অনেকে হেঁটে রওনা হয়েছেন। মাইলের পর মাইল দীর্ঘ বাস্তুচ্যুত মানুষের সারি।
গাজায় স্থল অভিযান চালানোর লক্ষ্যেই ইসরায়েল এ নিদের্শনা দেয়। এ অভিযানে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। তারা বলছে, এত অল্প সময়ে বিপুলসংখ্যক মানুষকে সরিয়ে নেওয়া ‘অসম্ভব’। বিশ্ব সংস্থাটি নির্দেশনা তুলে নিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আগেই গাজা সীমান্তের কাছে লাখ লাখ সেনা, ট্যাঙ্ক ও নানা সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করেছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলায় গাজায় মৃত্যু বেড়ে ১ হাজার ৮৪৫ জনে পৌঁছেছে। হামাসের অভিযোগ, পলায়নরত বেসামরিক মানুষের ওপরও বোমা ফেলেছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, আগামী দিনগুলোতে তারা গাজা সিটিতে বড় ধরনের অভিযান চালাবে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বেসামরিক নাগরিকরা ফিরে আসতে পারবেন না।
শনিবার (৫ অক্টোবর) হামাসের রকেট হামলার পরের দিন রোববার ইসরায়েলের পাল্টা বিমান হামলার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ। সর্বশেষ গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ অঞ্চলে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে সাত দিনে ৬১৪ শিশু, ৩৭০ জন নারীসহ কমপক্ষে ১৯০০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় আট হাজার ফিলিস্তিনি।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.