নোবিপ্রবিতে লিফট সমস্যা সমাধানের দাবিতে ফটক আটকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

দীর্ঘ প্রায় চার মাস যাবৎ নষ্ট থাকা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) অ্যাকাডেমিক ভবন-২ এর লিফট সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) একাডেমিক ভবন-২ এর প্রবেশদ্বার আটকে রেখে সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা লিফটের স্থায়ী সমাধান চাই’, ‘প্রশাসনের অবহেলা মানি না মানবোনা’, সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী লেখা নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এবং লিফট সমস্যার সমাধান চেয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনরত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লিফট সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আরও পড়ুন>> ম্যাক্সওয়েলের ডাবল সেঞ্চুরি, সেমিতে অস্ট্রেলিয়া

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দশতলা বিশিষ্ট এই ‘একাডেমিক ভবন-২’ এর প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ। এছাড়া ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম তলায় রয়েছে যথাক্রমে এপ্লাইড ম্যাথ বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ ও ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশন সায়েন্স বিভাগ।

৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম ও ১০ম তলায় যথাক্রমে এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স অ্যান্ড ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ইকোনমিকস বিভাগ ও এগ্রিকালচার বিভাগ একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

স্নাতক ও স্নাতকোত্তরসহ সবমিলে ৪৫ ব্যাচের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে এই ভবনের ২য় তলা থেকে ১০ম তলা পর্যন্ত প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন। এছাড়াও এসব বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যাতায়াত রয়েছে ভবনটিতে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, একটি লিফট নষ্ট থাকায় অন্য একটিতেই এই ভবনের সবার যাতায়াত। এই লিফটের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১৪ জন হওয়ায় সিঁড়ি বেয়েই অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১০ তলা পর্যন্ত উঠানামা করতে হয়। সিড়ি বেয়ে নিয়মিত যাতায়াতের ফলে শারীরিক জটিলতারও সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

এগ্রিকালচার বিভাগের শিক্ষার্থী হিমেল দাস বলেন, একাডেমিক ২ এর লিফটের সমস্যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে একটি বিষফোঁড়া। দুটি লিফট স্থায়ী ভাবে ও টেকসই ভাবে মেরামত না করার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় লিফটে আটকে থাকেন। যে কোনো সময় এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে আমরা মৃত্যু ও জীবন ঝুঁকির সম্মুখীন। আমরা এর দ্রুত ও স্থায়ী সমাধান চাই।

বিজিই বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, একাডেমিক ২ এর একটা লিফট নষ্ট হওয়ায় বাকি একটা লিফট এতো স্টুডেন্ট এবং স্যাররা ব্যবহার করার ফলে লিফটে জায়গা পাওয়া যায় না বললেই চলে। দেখা যায় যে ২০-২৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলেও লিফটে উঠা যাচ্ছে না। বেশীরভাগ সময় সিঁড়ি ব্যবহার করেই এতো উপরে যাওয়া লাগছে যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য।

এছাড়াও অনেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও সিঁড়ি দিয়ে উপরে যাওয়া লাগতেছে। যার কারনে দেখা যায় সিটি কিংবা ক্লাসে এটেন্ড করতে গিয়ে দেরি হয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, গত দুই দিন অবরোধ থাকার কারনে ঢাকা থেকে লিফট ঠিক করার মেকানিক আসতে পারে নাই। মেকানিকরা আজকে আসছে এবং আগামীকাল থেকে লিফট মেরামত করার কাজ শুরু হবে।

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us