সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি নেতারা মাঠে না থাকলেও ঢাকা মহানগর দক্ষিণে ৮ সন্ত্রাসী টিম গঠন করেছে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এসব টিমের কাজ হলো- ঝটিকা মিছিল ও ভাঙচুর করা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা, ককটেল বিস্ফোরণ করা, ছবি ভিডিও ধারণ করে পৌঁছে দেয়া এবং ঊর্ধ্বতন নেতাদের নির্দেশে অন্যান্য যেকোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করা। এই টিমের নেতাদের তত্ত্বাবধানে দিনমজুর ভাড়া করে রাজধানীতে নাশকতা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তার দাবি, ঢাকার বাইরে থেকে ৩০০ টাকার বিনিময়ে দিনমজুর ভাড়া করে এনে নাশকতা করায় বিএনপি।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন দাবি করেন।
আরও পড়ুন>> দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়
ডিবি প্রধান বলেন, সন্ত্রাসী এই টিম পরিচালনার জন্য আছেন কেন্দ্রীয় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতারা। মহানগর যুবদল, থানা এবং ওয়ার্ডভিত্তিক বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন। তারা ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলা থেকে সমমনা দিনমজুর, খেটে খাওয়া লোকদের দৈনিক ভাড়ার চুক্তিতে ঢাকা মহানগরীতে নিয়ে এসে কখনো কোমল পানীয়ের বোতল, কখনো অন্যান্য কন্টেইনারে কেরোসিন, দেশলাই সরবরাহ করেন। তারা চলন্ত গাড়িতে যাত্রীবেশে উঠে পেছন দিক থেকে আগুন লাগিয়ে দ্রুত নেমে পড়েন এবং পালিয়ে যান। কখনো মোটরসাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে যানবাহনে আগুন লাগানোর ব্যবস্থাও করে থাকে।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশ সদস্য হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর, পুলিশ হসপিটারে অগ্নিসংযোগ করে অ্যাম্বুলেন্স ও মোটরসাইকেলকে অগ্নিকাণ্ড, পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া, লাখ লাখ টাকার সিসি ক্যামেরা নষ্ট ও চুরি করাসহ নানা রকম ধ্বংসলীলার পরে বিভিন্ন মেয়াদে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছে। জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকলেও এই হরতাল এবং অবরোধে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা, জনসম্পদ এবং জীবন হানি ঘটানোর জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণে তারা আটটি সন্ত্রাসী টিম গঠন করেছে।
হারুন বলেন, এসব টিমের কাজ হলো-ঝটিকা মিছিল ও ভাঙচুর করা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা, ককটেল বিস্ফোরণ করা, ছবি ভিডিও ধারণ করে পৌঁছে দেওয়া এবং ঊর্ধ্বতন নেতাদের নির্দেশে অন্যান্য যেকোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করা। গত ২৯ অক্টোবরে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট যাওয়ার পথে তাঁতিবাজার মোড় এলাকায় বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগানোর ঘটনায় রাজিব হোসেন বিল্লাল নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ওঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এর মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ, গঠিত টিমের তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ ৩০ নভেম্বর হাজী পারভেজ নামে ছাত্রদল নেতা এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সচিব মাহফুজুর রহমানকে গ্রেফতার করে। তারা বর্তমানে চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে আছেন। দুই নেতা তাদের অপকর্মের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেন হারুন।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.