শরিকদের জন্য যেসব আসন ছেড়ে দিলো আওয়ামী লীগ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিকদের ৭টি আসন ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে নিজ বাসায় বৈঠকের পর এ তথ্য জানিয়েছে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।

ছেড়ে দেয়া আসনগুলো হলো- কুষ্টিয়া-২, লক্ষ্মীপুর-৪ বগুড়া-৪, রাজশাহী-২, সাতক্ষীরা-১, বরিশাল-৩ এবং পিরোজপুর-২।

জোট শরিকদের মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিকে তিনটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ) তিনটি ও জাতীয় পার্টিকে (জেপি) একটি আসন ছাড়ছে আওয়ামী লীগ।

এরমধ্যে বরিশাল–৩ আসনে প্রার্থিতা করতে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন কুষ্টিয়া ২ আসনে আর জেপি সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রার্থিতা করছেন পিরোজপুর–২ আসন থেকে।

আরও পড়ুন>> টাকা নিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন হিরো আলম!

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত কয়েকদিন ধরেই আসন বন্টন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করে আসছিল ১৪ দলের শরীকরা। এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে অন্তত তিনটি বৈঠক করেছে ১৪ দলের নেতারা। প্রথম দফায় গত ৪ ডিসেম্বর জোট নেতারা বসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। সে সময় জোট নেতারা তাঁদের প্রত্যাশা অনুযায়ী আসনের একটি তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে দিয়েছিলেন।

পরদিন জোট সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমুর সঙ্গেও বৈঠক করেন তারা। সবশেষ গত রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আবারও বৈঠক করেন তারা। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জোট শরীকরা ছাড় দেওয়া আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। আর বাকি আসনগুলোতে ভোট করবেন নিজেদের প্রতীক নিয়ে।

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ২৯টি দলের প্রার্থীরা এবার নির্বাচনে আসছেন। অন্যদিকে, বিএনপিসহ ১৫টি রাজনৈতিক দলের কোনো প্রার্থী এই নির্বাচনে নেই।

বর্তমানে ভোটের মাঠে থাকা রাজনৈতিক জোটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো বলা যেতে পারে ১৪ দলীয় জোটকে। বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিয়ে ২০০৪ সালে গঠিত হয় রাজনৈতিক জোট কেন্দ্রীয় ১৪ দল। জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ।

২০০৯ সালে এক–তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর জোট মহাজোট ক্ষমতায় আসে। এ সময় ১৪ দলের শরিক দলগুলোর কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায়ও স্থান পান। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও এ ধারা অব্যাহত ছিল। টানা দুই মেয়াদে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।

উল্লেখ্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সাত জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

এ ছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ছিল ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত, মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে বলে জানায় ইসি।

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us