মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির জন্য জরুরি: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রতিবেশী যেকোনো দেশের তুলনায় ভালো আছে। তাঁর দাবি, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও নানা সংকটের মধ্যেও এ সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। মূল্যস্ফীতিকে অর্থনীতির জন্য জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।

তাঁর মতে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও যথেষ্ট ভালো আছে। তবে রিজার্ভে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

আরও পড়ুন>> নতুন মন্ত্রিসভার শপথ বৃহস্পতিবার

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নিট বা গ্রস—উভয় হিসাবেই বাংলাদেশ ভালো অবস্থায় আছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) রিজার্ভের যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে, সেটা আমরা পূরণ করতে পারিনি। আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা কখনো পূরণ করা যাবে না। দেশে যত প্রবাসী আয় আসে, তা দ্বিগুণ করা সম্ভব। এত টালমাটাল পরিস্থিতির পরও দেশের রিজার্ভ ২৫-২৬ বিলিয়ন ডলার। এ বছর আমরা তা কোনোভাবেই ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামতে দেব না। এটা সম্ভব।’

ব্যাংকের সুদহার বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘সুদহার আগের পর্যায়ে রেখে দিলে এখন তা ২২-২৪ শতাংশে উঠে যেত। তাতে আমাদের অর্থনীতি ও দেশের মানুষ হারিয়ে যেত, কিন্তু আমরা তা হতে দিইনি।’

কিন্তু সুদহার আবার বাড়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সুদহার বাড়ছে, তা ঠিক। বাজার যদি তা নিতে পারে, তাহলে কেন বাড়বে না? কিন্তু সুদহার যখন বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, সে সময় ছোট, মাঝারি, এমনকি বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে বেশি সুদ দেওয়া সম্ভব ছিল না। এরপর খেলাপি ঋণ বেড়ে গেলে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে আমরা তা বাড়তে দিইনি। কিছু ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে বলে পত্রিকা থেকে জেনেছি, তা থাকবে না।’

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩—এই ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক খাত থেকে ছোট–বড় ২৪টি অনিয়মের মাধ্যমে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এটিকে তারা অনিয়মের খুব ক্ষুদ্র চিত্র বলে উল্লেখ করেছে। এ বিষয়ে নতুন সরকারের কোনো পরিকল্পনা থাকবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন সরকার এখনো গঠিত হয়নি। ফলে এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা সমীচীন হবে না।’

সিপিডির পরামর্শের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন দায়িত্ব নিই তখনই তাদের বলেছি, আপনারা এর মধ্যে আসবেন না। তারা বারবার বলেছে, ডিভ্যালু (টাকা অবমূল্যায়ন) করেন। তা না করলে টিকতে পারবেন না। আমরা সেটা শুনিনি। আমরা তো টিকে আছি! আমরা কি না খেয়ে আছি? বাজারে জিনিসপত্র তো পাওয়া যাচ্ছে। বাজার থেকে কোনো জিনিস অবিক্রীত ফেরত আসে?’

এ সময় মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গ তুললে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির জন্য জরুরি। যাঁরা অর্থনীতি নিয়ে ওইভাবে চিন্তা করেন না, তাঁরা মূল্যস্ফীতি না চাইতে পারেন। ৮–১০ বছরের মতো মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রেখেছি। এর চেয়ে ভালো আর হতে পারে না।’

নতুন সরকারের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ কী হতে পারে, সেই প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা নতুন সরকার জানে। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের চ্যালেঞ্জ হবে অর্থনীতি। অর্থনীতিতে গুরুত্ব দেয়া হবে।’

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us