বান্দরবানে রুমা-বগালেক-কেওক্রাডং সড়কে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে একটি পর্যটকবাহী জিপ গাড়ি পাহাড়ি খাদে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীসহ দুই পর্যটক মারা গেছেন। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। হতাহতরা সবাই নারী। ‘ভ্রমণ কন্যা’ নামের একটি সংগঠনের হয়ে তাঁরা কেওক্রাডং ভ্রমণে গিয়েছিলেন।
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)সৈয়দ মাহবুবুল হক ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৫০০ মিটার পাহাড়ি খাদে পড়ে যায়।
গাড়িতে পর্যটক ছিলেন ১৩ জন। দুজন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। নিহত দুজনের মধ্যে ফিরোজা বেগম (৫৩) প্রথম আলোর সহসম্পাদক সজীব মিয়ার শাশুড়ি। অন্যজন জয়নাব খাতুন (২৪) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী। আহতরা হলেন রাফান (১২), উষসী নাগ (১৫) ও জবা রায় নাগ(৪৫), মাহফুজা ইসলাম(৪৫), আমেনা বেগম (৬০), তাহমিনা তানজিম তালুকদার (১৯), তাননিম, রিজভী (৩৪), আঞ্জুমান হক (৩৫) ইতু (১৬) ও স্বর্ণা (২৩)।
হতাহতদের সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার করে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেছে। গাড়ির চালক পলাতক রয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে পর্যটকদের গাইড মুনথাং বম বলেন, পর্যটক দলটি ক্রেওক্রাডং দেখে ফিরছিলেন। এ সময় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাতে পড়ে উল্টে যায়। হতাহতদের প্রথমে স্থানীয় লোকজন ও সঙ্গে থাকা পর্যটকেরা উদ্ধারের চেষ্টা করেন।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় লোকজনের সূত্রে জানা গেছে, ‘ট্রাভেলেটস অব বাংলাদেশ—ভ্রমণকন্যা’ সংগঠনের ৫৭ জনের একটি দল চারটি চাঁদের গাড়ি নামে পরিচিত ফোর হুইল জিপ গাড়িতে আজ সকালে বগালেক থেকে কেওক্রাডং পাহাড় চূড়ায় গিয়েছিলেন। কেওক্রাডং ভ্রমণ শেষে ফেরার পথে দার্জিলিংপাড়া ও রুমসংপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ি খাদে পড়ে যায়। অন্য গাড়িতে থাকা ভ্রমণকারীরা স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় প্রাথমিকভাবে হতাহতদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। পরে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ও উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায়।
রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) মো. আব্দুল্লাহ আল হাছান জানিয়েছেন, দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের প্রথমে বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সের সহযোগিতা নিয়ে বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.