রাজধানীর গুলশান-১–এ অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ গুলশান শপিং সেন্টার ভাঙতে শান্তা হোল্ডিংস লিমিটেডকে অনুমতি দিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। ফলে শান্তা হোল্ডিংসের ভবনটি ভাঙতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বাণী চিত্র প্রতিষ্ঠান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চলচিত্র প্রতিষ্ঠানের পরিচালক জিয়া ইয়ামীন লিভ টু আপিল করেছিলেন।
আদালতে জিয়া ইয়ামীনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও মুস্তাফিজুর রহমান খান। বাণী চিত্র ও চলচিত্র প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী। শান্তা হোল্ডিংসের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোশতাক আহমেদ চৌধুরী ও খন্দকার নাজমুল আহসান। রাজউকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও দোকানমালিকদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুরাদ রেজা শুনানিতে ছিলেন।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, এর আগে ২০০৬ সালে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শান্তা হোল্ডিংসের ভূমি উন্নয়নে চুক্তি হয়। পাশাপাশি দুই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শান্তা হোল্ডিংসকে আমমোক্তারনামা দেওয়া হয়। পরে অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত বছরের আগস্টে আমমোক্তারনামা বাতিল বিষয়ে শান্তা হোল্ডিংসকে বাণী চিত্র ও চলচিত্র নামে দুটি কোম্পানির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়।
গত বছরের ১৩ জুলাই গুলশান শপিং সেন্টারের ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনো ভবনটি সিলগালা করে দেয় ডিএনসিসির অঞ্চল-৩–এর নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। শপিং সেন্টার ভবনটির সিলগালা খুলে ভাঙার অনুমতি দিতে গত জুলাইয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনে আবেদন করে বাণী চিত্র ও চলচিত্র প্রতিষ্ঠানের নিযুক্ত আমমোক্তার শান্তা হোল্ডিংস লিমিটেডের পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম হাবিবুল বাসিত। এতে ফল না পেয়ে তিনি গত বছর হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ওই রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে বাণী চিত্র প্রতিষ্ঠান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চলচিত্র প্রতিষ্ঠানের পরিচালক জিয়া ইয়ামীন লিভ টু আপিল করেন, যা আজ খারিজ হলো।
আদেশের পর শান্তা হোল্ডিংসের আইনজীবী মোশতাক আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট শান্তা হোল্ডিংসের নিজ খরচে ও দায়িত্বে ভবনটি ভাঙতে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। এ কাজে উত্তর সিটি করপোরেশনকে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছিল। রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে শান্তা হোল্ডিংসের ওই ভবন ভাঙতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রইল। শান্তার ভবনটি ভাঙতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.