অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টরকে অব্যাহতি, শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরোজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে পদ থেকে অব্যাহতি এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশে অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রক্টরিয়াল বডি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন>> প্রক্টর-সহপাঠীকে দায়ী করে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

জানা যায়, শুক্রবার রাতে ফাইরুজ অবন্তিকা নামের ঐ শিক্ষার্থী কুমিল্লায় নিজবাড়িতে গলায় ফাঁস নেন। পরে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবন্তিকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।

মৃত্যুর আগে এক ফেসবুক পোস্টে নিজের মৃত্যুর জন্য নিজের সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করে গেছেন।

মারা যাওয়ার আগে ফেসবুকে যা লিখে গেছেন অবন্তিকা, ‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী ও সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান আমাকে অফলাইন ও অনলাইনে থ্রেটের (হুমকি) ওপর রাখতো, সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয়নি। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানানভাবে ভয় দেখায়। আম্মানের হয়ে, আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস (বিচার) পাবো না।’

তিনি আরো লিখেছেন, ‘দ্বীন ইসলাম আমাকে প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারীজাতিয় গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে এখনও আমাকে নানাভাবে মানহানি করতেসে বিভিন্নজনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে। এই লোক আমাকে আম্মানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৭ বার প্রক্টর অফিসে ডাকায় নিয়ে ‘…(অপ্রকাশ যোগ্য) তুই এই ছেলেরে থাপড়াবি বলসস কেনো? তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে ছাল তুলি, তোরে এখন কে বাঁচাবে?’

অবন্তিকা আফসোস নিয়ে আরো লিখেছেন, ‘এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিলো। একবার জেল খেটেও সে এখন জগন্নাথের প্রক্টর। সো ওর পলিটিক্যাল আর নষ্টামির হাত অনেক লম্বা না হলেও এত কুকীর্তির পরও বহাল তবিয়তো থাকে না, এমন পোস্টে। কোথায় এই লোকের কাজ ছিল গার্ডিয়ান হওয়া, আর সো কি না শেষমেশ আমার জীবনটারেই শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি দিলো না।’

ঐ পোস্টে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে লেখা হয়েছে, ‘আমি উপাচার্য সাদেকা হালিম ম্যামের কাছে, এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে বিচার চাইলাম।’

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us