ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভের ঘটনায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে অন্তত ২ হাজার ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে এই গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে সহিংস উপায় অবলম্বন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনিক ভবন খালি করার সময় ‘দুর্ঘটনাবশত’ একজন পুলিশের বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার ঘটনাও ঘটে। শুক্রবার (৩ মে) মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন…শনিবার যেসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
বৃহস্পতিবার (২ মে) নিউইয়র্ক পুলিশ বলেছে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিলটন হলে গুলি ছোড়ার ঘটনায় কেউ আহত হননি। এক পুলিশ সদস্য তার বন্দুকের সঙ্গে লাগানো ফ্লাশলাইট জ্বালানোর চেষ্টা করছিলেন। তখন একটি গুলি বেরিয়ে হলের দেয়ালে লাগে। তবে ঘটনাটি পর্যালোচনা করে দেখছে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির দপ্তর।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে অন্তত ৫৬টি গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়। এসব অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ২০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে। তাদের মধ্যে শুধু কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সর্বশেষ গতকাল সকালে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেসে (ইউসিএলএ) অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার অনুরোধ করলে তারা তা অমান্য করেন। এসময় অন্তত ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরাও ইসরায়েলের সঙ্গে বা গাজা যুদ্ধকে সমর্থনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধে আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের এমন ব্যাপক বিক্ষোভ এ শতকে আর দেখা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের আইনের শাসন বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আরও পড়ুন…পাহাড় ধসে বাঘাইছড়ির সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক টেলিভিশন বিবৃতিতে বাইডেন এ আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ক্যাম্পাসগুলোতে অবশ্যই শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা একটি কর্তৃত্ববাদী জাতি নই, যেখানে জনগণকে চুপ করিয়ে দিই বা ভিন্নমত দমন করি। তবে আমরা আইনহীন দেশও নই।’ তিনি একটি সুশীল সমাজ এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েল এই বিক্ষোভকে ‘ইহুদিবিদ্বেষ’ বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে ইসরায়েলের সমালোচকেরা বলছেন, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতেই এমন অভিযোগ করা হচ্ছে।
গত ১৭ এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলিস্তিনিপন্থীদের বিক্ষোভ শুরু হয়। তারা গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের অবসান দাবি করছেন। ফিলিস্তিনের উপত্যকাটিতে গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বাহিনীর নারকীয় অভিযানে এ পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
ইবাংলা/ বা এ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.