রাঙামাটিতে ট্রাক ড্রাইভারদের মাঝে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক নেতা রুহুল আমিনকে রাউজান ডেকে নিয়ে মারধর করাসহ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ৬টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙামাটিস্থ ট্রাক টার্মিনালে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে রাঙামাটি জেলা সড়ক পরিবহণ ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন, অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন, ট্রাক চালক কল্যাণ সমিতি, নৌ-যান শ্রমিক ইউনিয়ন, লঞ্চ মালিক সমিতি ও মিনি ট্রাক-পিকআপ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন…জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বলেন, মিথ্যা মামলা, হামলা করে রাঙামাটির ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা রুহুল আমিনকে ফাঁসানো চক্রান্ত বন্ধ না হলে যেকোনো সময় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম রুটে এবং রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের সকল রুটে সকল প্রকার যাত্রীবাহি ও মালবাহি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে ধর্মঘট পালনের হুমকি দিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন এতে করে সৃষ্ট পরিস্থিতির দ্বায় তারা নেবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে রাঙামাটি জেলা সড়ক পরিবহণ ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন তার বক্তব্যে জানান, গত রমজানের শুরুতে তুচ্ছ ঘটনায় কয়েকজন ট্রাক ড্রাইভার নিজেদের মধ্যে বিতন্ডায় লিপ্ত হয়। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ছিদ্দিক ড্রাইভারের নেতৃত্বে রাঙামাটি থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রায় দেড়শো মালবাহি ট্রাক রাউজানে আটক করে রাখে এবং রাঙামাটির ড্রাইভারদের মারধর করে রাউজানের সন্ত্রাসীরা। বিষয়টির মিমাংশা করার কথা বলে রাঙামাটির সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে নিয়ে রাউজান যায়। সেখানে তাদের সামনেই আমাকে প্রচন্ড রকমের মারধর করা হয়।
এই ঘটনার পর আমি মূমুর্ষ অবস্থায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চারদিন চিকিৎসা গ্রহণ করেছি। বিয়ষটি নিয়ে আমি চট্টগ্রামের আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু এই ঘটনাটি জেনে যাওয়ায় আমাকে ফাঁসানোর লক্ষ্যে রাঙামাটির মানিকছড়িস্থ রউফ চত্ত্বরে মঙ্গলবার ভোররাতে পাথর বোঝাই ট্রাক নিয়ে আসার সময় চালক ইলিয়াছের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে তাকে গুরুত্বর আহত করে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ন মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে রাঙামাটির ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা রুহুল আমিন, তার ছেলেসহ সহকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার অপচেষ্ঠা চালানো হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, এই ধরনের মিথ্যা মামলা হলে রাঙামাটির সকল যান্ত্রিক পরিবহণ সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে আগামীতে সকল প্রকার যান-বাহন বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন…হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
এদিকে রুহুল আমিনের অভিযোগ অস্বীকার করে রাঙামাটি সদর উপজেলার চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান মহসিন রোমান জানিয়েছেন, রুহুল আমিন নিজেই আমার কার্যালয়ে এসেছিলো এবং আমাকে রাউজান নিয়ে গিয়ে সমাধানের অনুরোধ করেছিলো। সেসময়ের সিসিটিভি’র ফুটেজও রয়েছে। এছাড়াও রাঙামাটির সদর সার্কেলের দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও কোতয়ালী থানার ওসির পক্ষ থেকেও আটককৃত ট্রাকগুলো ছাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আমাকে রাউজান যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিলো। পরে সেখানে গেলে রুহুল আমিনের উল্টাপাল্টা কথা বার্তায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে মারধরের চেষ্ঠা চালায়।
আমি রুহুল আমিনকে সেখান থেকে রক্ষা করে রাঙামাটিতে নিয়ে আসি। রুহুল আমিন নিজেও সেটি স্বীকার করে বক্তব্য দিয়েছে। এখন সম্পূর্ন মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, রাঙামাটি ও চট্টগ্রামের রাউজানের ট্রাক চালকদের মাঝে অর্ন্তকোন্দলের ফলে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় উভয় এলাকার চালকদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং অনেক চালক এখন আর গাড়ি নিয়ে এলাকার বাইরে যাচ্ছেনা। যেকোনো সময় এই বিষয়ে আরো বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পরিবহণ সংশ্লিষ্ট্যরা।
ইবাংলা/ বা এ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.