ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ইরানের সরকারি গণমাধ্যম। ইরানের সরকারি মিডিয়াগুলো জানিয়েছে, হেলিকপ্টার যেখানে ভেঙে পড়েছিল, সেখানে রাইসির দেহ পাওয়া গেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহিয়ানও মৃত বলে জানানো হয়েছে। হেলিকপ্টারে মোট নয়জন ছিলেন। সকলেই মারা গেছেন।
রাইসির বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। ইরানের সংবাদসংস্তা জনিয়েছে, ”আয়াতোল্লাহ ইব্রাহিম রাইসি ইরানের মানুষের প্রতি কর্তব্য করতে ও রাষ্ট্রীয় কাজ করতে গিয়েছিলেন। দুর্ঘটনায় তিনি শহিদ হয়েছেন।”
ইরানের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে আগে জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টার সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবাই মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার (২০ মে) সকালে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই জানানো হয়, সেখানে প্রাণের কোনো চিহ্ন তারা পাননি বলে রাশিয়ার উদ্ধারকারী দল জানায়।এই দলে ৪৭ জন বিশেষজ্ঞ উদ্ধারকারী আছেন। এছাড়া একটি হেলিকপ্টার এবং সব ধরনের জায়গায় যেতে পারে এমন কিছু গাড়িও পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় সব জিনিস নিয়ে উদ্ধারকারী দলটিকে ইরানের শহর তাবরিজে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার আগে এখান থেকেই প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টারে উঠেছিলেন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র পেসকভকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থাট জানিয়েছে, উঁচু জায়গায় সবচেয়ে কঠিন উদ্ধারকাজের দক্ষতা এই দলটি তৈরি আছে। আবহাএওয়া একটু ভালো হলে, কুয়াশা কেটে গেলে উদ্ধারকারী দল ইরানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করবে বলে জানানো হয়েছে।
তুরস্কের পাঠানো ড্রোন থেকেও হেলিকপ্টারের খোঁজ চলছে। সংবাদসংস্থা অ্যানাডোলু জানিয়েছে, ড্রোনটি থেকে একটি পাহাড়ের গায়ে কালো অংশ দেখতে পেয়েছে। অনেক উঁচু থেকে রাতে তোলা ড্রোনের ছবিও প্রকাশ করেছে তারা।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে একই হেলিকপ্টারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আব্দুল্লাহিয়ান ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও ছিলেন।ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম ইরনা জানিয়েছে, এই হেলিকপ্টারে পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতিও ছিলেন।
আজারবাইজান সীমান্তে ইরানের উত্তরাঞ্চলে রোববার পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে এই ঘটনা ঘটেছে৷ তবে ঠিক কী কারণে এবং কী ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও জানা যায়নি।
ইরানের খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মীদের পাঠানো হয়েছে এবং উদ্ধার তৎপরতা চলছে৷ তবে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া এবং দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে৷
প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজেন একটি বাঁধের উদ্ধোধন করতে গিয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট৷ সেখান থেকে ফেরার পথে দেশটির উত্তরাঞ্চলের পাবর্ত্য এলাকায় বিমানটি বিপজ্জনক অবতরণ করতে বাধ্য হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে৷
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা হেলিকপ্টার থেকে নামছেন আজারবাইজানেউচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা হেলিকপ্টার থেকে নামছেন আজারবাইজানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজেন একটি বাঁধের উদ্ধোধন করতে গিয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ওয়াহিদি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার রোববার ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ বা বিপজ্জনকভাবে অবতরণ করেছে।
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘মহামান্য প্রেসিডেন্ট এবং তার সঙ্গীরা বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টারে করে দেশে ফিরছিলেন৷পথে খারাপ আবহাওয়া এবং কুয়াশার কারণে একটি হেলিকপ্টার হার্ড ল্যান্ডিং করতে বাধ্য হয়৷”
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.