তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ কমাতে রাস্তা অবরোধ বন্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ ও শুধুমাত্র শুক্রবারে সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।
রোববার (১৪ জুলাই) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানের ঠিকানায় এ নোটিশ দিয়েছেন অ্যাডভোকেট হাসান এন্ড এসোসিয়েটসের স্বত্ত্বাধিকারী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।
আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার বলেন, বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো কর্তৃক জনগণকে ভয়ভীতি দেখানো, বল প্রয়োগ করা, রাস্তা অবরোধ, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কোনো প্রকার জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০২৪ এর ৪ ধারা ও প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুসারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে, জনগণের জান মাল ও স্বাধীনভাবে রাস্তায় চলাচলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলোকে শুক্রবার ছাড়া অন্যান্য দিনগুলোতে রাস্তায় সভা, সমাবেশ, মিটিং, মিছিল, শোভাযাত্রা ও ঢাকার রাস্তায় যানজট সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ তৈরি করা থেকেও সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকার কথাও বলে হয়েছে।
এ বিষয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশের অধিকার দেওয়া হয়েছে।
এ অনুচ্ছেদ অনুসারে, ‘জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হওয়ার এবং জনসভায় যোগদান করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। ’
প্রত্যেক নাগরিক তার স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য সভা সমাবেশ মিটিং মিছিল করতে পারেন। কিন্তু, মিটিং মিছিলের কারণে যেন কোন দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি না হয় কিংবা অন্য কোন নাগরিকের স্বাভাবিক জীবন যাপনের ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় এজন্যও যথাযথ অনুমতির প্রয়োজন।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা এবং এইচএসসি পরীক্ষা চলছে। এ সময় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে রাস্তা অবরোধ যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঘটনা ঘটছে।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে কর্মব্যস্ত দিনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ করে সভা, সমাবেশ, মিটিং, মিছিল করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১২৭, ১২৮ ও ১২৯ ধারা এবং পুলিশ আইন ১৮৬১ এর ৩০, ৩১ ও ৩২ ধারা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তা অবরোধ, যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে।
এরপরও আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ আইন, ২০২৪ এর ৪ ধারা কিংবা প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুসারে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা বাংলাদেশ পুলিশ কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়নি।
যার দায়ভার কোনভাবেই লিগ্যাল নোটিশ গ্রহীতা ১-৪ নং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানের এড়িয়ে যাবার কোন প্রকার সুযোগ নেই।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.