আনিসুল হক ও বান্ধবীর অবৈধ সম্পদের খোঁজে দুদক

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও তার বান্ধবী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সম্পর্কিত খবর

সোমবার (৭ অক্টোবর) দুদকের ঊর্ধ্বতন সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশন থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আনিসুল হক এবং তার বান্ধবীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রকল্পে অনিয়মসহ দেশে বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের তথ্য আমলে নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

দুদকের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আনিসুল হক এবং তৌফিকার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

২০১৪ সালে আইনমন্ত্রী হন আনিসুল হক। এরপর দীর্ঘ প্রায় এক দশক তিনি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রচুর অবৈধ সম্পদ অর্জন করার অভিযোগ রয়েছে। নিজ নামে কসবা, ত্রিশাল এবং পূর্বাচলে ৬.৮০ একর জমি কিনেছেন। সিটিজেন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংকে শেয়ারের পরিমাণ ৪০.১০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা এবং অন্যান্য বিনিয়োগ ২৩ কোটি ২৬ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৪ টাকা। এছাড়া ৪টি গাড়ি ও ১টি মোটরসাইকেল রয়েছে।

২০১৪ সালের পর থেকে বিচারাঙ্গনে মন্ত্রী ও তার বান্ধবী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ ছিল না। বিভিন্ন জেলা ও মহানগরীর অধস্তন আদালতে যত নিয়োগ হয়েছে তার অধিকাংশেই খাতা পরিবর্তন, জালিয়াতি, পরীক্ষা না দিয়েও চাকরি হওয়াসহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ-বাণিজ্যসহ নানা অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। আর নিয়োগপ্রাপ্তদের বেশিরভাগের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা অথবা কুমিল্লা এলাকার বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া তৌফিকা করিমের নামে-বেনামে দেশে-বিদেশে অঢেল সম্পদ রয়েছে। তৌফিকা করিম সিটিজেন চার্টার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন বিধায় তার মাধ্যমে আনিসুল হক কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে কোটি কোটি টাকা পাচার করতেন। তিনি নিম্ন আদালতের অধিকাংশ কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করতেন। তার সব দুর্নীতির সঙ্গে তৌফিকা করিমের সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে তথ্যানুসন্ধানে জানতে পারে দুদক।

উল্লেখ্য, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাবা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের চেম্বারে জুনিয়র হিসেবে কাজ করতেন তৌফিকা করিম। সিরাজুল হক মারা যাওয়ার পর তৌফিকা হয়ে যান আনিসুল হকের জুনিয়র। তৌফিকা আইনপেশার সূত্রে আনিসুল হকের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। স্ত্রী-সন্তানবিহীন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আস্থাভাজন ও ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত পান আদালত পাড়ায়।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us