গাজা উপত্যকায় গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে রোববার ভোরেও একটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে বর্বর ইসরাইলি বাহিনী। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের ওপর চালানো ওই বিমান হামলায় ৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, সর্বশেষ এই আক্রমণটি ছিল বর্বর ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সবচেয়ে ভয়াবহ অভিযান। যাতে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।এটি গত কয়েক সপ্তাহে ফিলিস্তিনি এলাকাগুলোর ওপর চালানো একাধিক বিমান হামলার অংশ, যা ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সহিংসতা ক্রমবর্ধমান করছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হামলায় শিশু ও মহিলাসহ বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, সর্বশেষ এই হামলাসহ ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছেন।ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৪৩,৬০৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,০২,৯২৯ জন আহত হয়েছেন।
চলমান সংঘর্ষে নিহত এবং আহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা চরম চাপের মধ্যে রয়েছে। অনেক হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইতোমধ্যেই উপকরণের সংকটে পড়েছে এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আহতদের সহায়তায় হিমশিম খাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে দ্রুত মানবিক সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানানো হচ্ছে এবং সংঘর্ষের অবসানে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি উঠেছে।এদিকে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সর্বশেষ এই হামলার কারণ হিসেবে জানিয়েছে, তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং গাজার সশস্ত্র সংগঠনগুলোর ওপর আঘাত হানা হচ্ছে।
তবে এই হামলার ফলে গাজার বেসামরিক লোকদের ওপর যে ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এই সহিংসতার অবসান এবং মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে। সূত্র: আল-জাজিরা
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.