নতুন ইতিহাস গড়ল ভারত,মহাকাশে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইতিহাস গড়ে মহাকাশে মানবহীন মহাকাশযানের ডকিং সফলভাবে সম্পন্ন করেছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পর বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে এ সাফল্য অর্জন করল দেশটি। এই অর্জন ভবিষ্যতে ভারতের মহাকাশ স্টেশন তৈরির পথ প্রশস্ত করবে।

Islami Bank

বৃহস্পতিবার ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এক্স পোস্টে জানায়, মহাকাশযান ডকিং সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে! এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। খবর এএনআই

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা তাদের স্পেস ডকিং এক্সপেরিমেন্ট (স্পাডেক্স) নামের মিশনে প্রায় ২২০ কিলোগ্রাম ওজনের দুটি ছোট মহাকাশযানকে নিম্ন-পৃথিবী কক্ষপথে স্থাপন করেছে। টার্গেট এবং চেজার নামের দুটি মহাকাশযান গত ৩০ ডিসেম্বর দক্ষিণ অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ভারতীয় তৈরি একটি পিএসএলভি রকেটে করে উৎক্ষেপণ করা হয়।

স্পাডেক্স মিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশটির মহাকাশমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, ভারতের স্পাডেক্স মিশন মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন যুগের সূচনা করবে, যা ভারতের প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রদর্শন করে।

ইসরোর তথ্যানুসারে, ভারত যদি একজন ভারতীয় নাগরিককে চাঁদে পাঠানোর, একটি স্বদেশী মহাকাশ স্টেশন তৈরি করার এবং চন্দ্রের নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে আসার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে নিয়ে এগোতে চায়, তাহলে দেশীয়ভাবে উন্নত ডকিং প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

মহাকাশমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং গত ৩১ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, এ প্রযুক্তি ভারতকে একটি উপগ্রহ বা মহাকাশযান থেকে অন্য উপগ্রহে (যেমন- পেলোড), চন্দ্রের নমুনা পৃথিবীতে আনা এবং মহাকাশে নভোচারী পাঠানোর সুযোগ করে দেবে।

মিশনের অংশ হিসেবে, ডক করা মহাকাশযানটি সংযুক্ত হওয়ার পরে তাদের মধ্যে বৈদ্যুতিক শক্তি ট্রান্সফার করা যাবে। ভবিষ্যতের মিশনের সময় মহাকাশে রোবোটিক্স, মহাকাশযান নিয়ন্ত্রণ এবং পেলোড অপারেশন পরিচালনার জন্য এটি অপরিহার্য।

one pherma

ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরো এর আগে গত ৭ এবং ৯ জানুয়ারি দু’বার ডকিংয়ের চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে দু’বারই পরীক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয়।

এই আবহে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, এই অভিযানে হয়তো লক্ষ্য পূরণের আগেই ইসরো হাল ছেড়ে দেবে এবং ডকিংয়ের চেষ্টা করা হবে না। তবে গত রোববার এ সংক্রান্ত পরীক্ষায় সফলতা পায় ভারত। এরপর ১৬ জানুয়ারি মহাকাশে দুটি মহাকাশযান সংযুক্ত করল ইসরো।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এর আগে ২০২৩ সালে চন্দ্র অভিযানে নতুন রেকর্ড গড়েছিল ভারত। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটিতে ল্যান্ডার নামিয়েছিল। চন্দ্রযান-৩ নামের ওই মিশনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ভারত সফলভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান অবতরণ করে।

উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, ভারত আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মহাকাশে প্রথম ক্রু মিশন পাঠাবে এবং ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে একজন নভোচারী পাঠাবে। চাঁদে নভোচারী পাঠানো একমাত্র দেশ এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র।

ভারত ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরির লক্ষ্যও স্থির করেছে, যেটির নাম হবে ‘ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন’। ২০২৮ সালে শুক্র গ্রহের প্রথম কক্ষপথ অভিযান চালাবে ভারত। চলমান চন্দ্রায়ণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২০২৭ সালে চাঁদের নমুনা পৃথিবীতে আনার পরিকল্পনাও রয়েছে ভারতের।

ইবাংলা বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us