“তারেক রহমানের নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বর্ণযুগের সূচনা হবে”

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলর বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল বলেছেন, জনগণ সমর্থনের মাধ্যমে আগামীতে যদি বিএনপির সরকার গঠিত হয় তাহলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বর্ণযুগের সূচনা হবে; শুধু বাংলাদেশ নয় এই উপমহাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিশীল জায়গায় পরিণত হবে পার্বত্য চট্টগ্রাম।

Islami Bank

আরও পড়ুন…মার্চে বাংলাদেশ সফরে আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রায় ২০ বছর পর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, রাষ্ট্রের পতিত ফ্যাসিবাদের চক্রান্তের মোকাবিলাসহ নানা দাবিতে সোমবার বিকালে রাঙামাটি শহরের রিজার্ভবাজারস্থ শহিদ আবদুস শুক্কুর মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপি আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা হাবিব-উন নবী খান সোহেল এই মন্তব্য করেছেন।

এসময় তিনি অর্ন্তবর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মনে হচ্ছে সরকারের ঘাড়ে জঙ্গিভূত ভর করে চেপে বসেছে। বলা হচ্ছে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন; কিন্তু তা করার চেষ্টা করলে জনগণ কখনো মানবে না। আগামী সংসদ নির্বাচনের ভোট নিয়ে টালবাহানা করলে জনগণ তা বরদাশত করবে না। দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করবেন না। তাই বলছি ভুল করবেন না। জনগণের ম্যান্ডেট মেনে নিন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার আমলে ১৬-১৭ বছর মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। তরুণ ভোটাররা এখনো কোনো ভোট দিতে পারেনি। আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। জনগণ এখন নির্বাচনের অপেক্ষায়।

সমন্বয়কদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ২৪-এর ৫ আগস্টের পর বাচ্চা ছেলেরা অনেক কিছু বলে যাচ্ছে। আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে ওরা বলে, বিএনপি এতদিন কোথায় ছিল? কিন্তু তারা বিএনপির মূল আন্দোলন-কর্মসূচি নিয়ে বলে না। কারণ তারেক রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি যখন আন্দোলন-কর্মসূচি পালন করেছিল তখন তারা (সমন্বয়করা) ছাত্রলীগ করত। তারেক রহমান দিনরাত কষ্ট করে গেছেন। ফলে সবাই মিলে আমরা স্বৈরাচার ঘটাতে সফল হয়েছি।

one pherma

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে অধিকার হারিয়েছে। তাদের নির্বাচনে দাঁড়ানোর আর কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগের এক গডফাদার বলতেন খেলা শুরু হয়ে গেছে। কী খেলা- অস্ত্রের খেলা। আমাদেরকে অস্ত্রশক্তির ভয় দেখাতেন। আমরা ভয় করি না। আমাদের শক্তি জনশক্তি। তাই জনশক্তির কাছে পরাজিত হয়ে তাদের লেজ গুটিয়ে পালাতে হয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, শুনছি সমন্বয়করা নাকি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছেন। তা খুবই ভালো। আমরা এতে স্বাগত জানাই; কিন্তু রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যদি কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করলে পরিণতি ভালো হবে না। জনগণ তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে।

উক্ত সমাবেশে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, বিগত ১৬ বছরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল, কৃষকদল, মহিলা দল, তাতীদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে খাটি সোনায় পরিণত হয়েছে। এরা পরীক্ষিত ফোর্স; এরা ভয়কে জয় করতে শিখেছে,নির্যাতন সহ্য করতে শিখেছে এবং তারা বুক চিতিয়ে প্রতিবাদ করতে শিখেছে। এই ফোর্সকে ট্রাই কইরেন না, এদের পরীক্ষা নিয়েন না, দুই সেকেন্ডও টিকবেন না তাই অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর উন্মুক্ত পরিবেশে রাঙামাটিতে বিশাল জনসভা করল জেলা বিএনপি। সমাবেশ ঘিরে নতুন উদ্যমে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন দলটির নেতাকর্মীরা। দেখা দেয় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। জনসভায় সকাল থেকে ঢল নামে নেতাকর্মী ও জনতার। এর আগে সর্বশেষ ২০০৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে রাঙামাটি স্টেডিয়ামে এ ধরনের সমাবেশ করেছিল জেলা বিএনপি।

জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মাহবুবের রহমান শামীম। এছাড়া ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান ও সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, সাবেক সংসদ সদস্য প্রার্থী মৈত্রী দেওয়ানসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা নেবৃবৃন্দ উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

ইবাংলা/ বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us