পল্লী বিদ্যুতে ব্ল্যাকআউট ঘোষণাকারী চাকরিচ্যুতরা ফের ষড়যন্ত্রে

আমিনুল ইসলাম/ সুমন শিকদার

নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মরত বিলিং সহকারী জাকুলিন বাশার টুম্পা এবং কানামনা ময়মনসিংহ বিভাগের সকল পবিস হতে দশ হাজার টাকা করে চাঁদা সংগ্রহ করছেন। অনেকের চাঁদা দেওয়ার প্রমাণও মিলছে। যারা চাঁদা দিতে অপারগ তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ হুমকি ধামকি দিচ্ছে। বিলিং সহকারি নীলা মল্লিকের কাছে চাঁদার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনো দেইনি তবে কিছুদিনের মধ্যে দেবেন বলে স্বীকার করেন এ প্রতিবেদকের কাছে।

Islami Bank

আরও পড়ুন…জিয়াউল আলম সাবেক সিনিয়র সচিব রিমান্ডে

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদেরই অনুসারী পল্লী বিদ্যুতের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী দেশব্যাপী বিভিন্ন দাবি দফার অজুহাত তুলে গেল বছর ১৭ অক্টোবর দেশব্যাপী ব্ল্যাক আউট ঘোষণা করে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। তারপরেও থেমে নেই ষড়যন্ত্রের জাল বোনা ।

সম্প্রতি তাদের অনুসারীদের মাধ্যমে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করছে এমন তথ্য হাতে এসেছে ইবাংলা ডট প্রেসের কাছে। আন্দোলনকে বেগবান করা ও পল্লী বিদ্যুতকে অস্থিতিশীল করার জন্য। এসব বিষয়ে ইবাংলার সিনিয়র প্রতিবেদক আমিনুল ইসলাম সরেজমিনে খোঁজখবর নিয়ে চাঁদা তোলার বিষয় নিশ্চিত হন।

চাঁদা সংগ্রহের কিছু তথ্য প্রমাণ

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাগণ তাদের পদ-পদবী পরিবর্তনের জন্য গত ২৮ জানুয়ারী ২০২৪ তারিখে বাপবিবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কয়েক দফায় স্মারকলিপি প্রদান করে বিফল হয়ে কর্মবিরতি-তে যাওয়ার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা সংঘবদ্ধ হতে থাকে।

৫ মে ২০২৪ তারিখে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি শুরু করলে কেন্দ্রীয় নেতা রাজন কুমার দাসসহ ৪ জন-কে বাপবিবোর্ড-এ সংযুক্ত করা হয়। পদ-পদবী পরিবর্তনের দাবীকে অভিন্ন সার্ভিস কোড ও সকল অনিয়মিতদের নিয়মিত করার দুই দফা দাবীতে পবিসের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা ৫ মে হতে ১০ মে পর্যন্ত একটানা কর্মবিরতি পালন করে।

one pherma

পরবর্তীতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পহেলা জুলাই-২০২৪ তারিখে পুনরায় কর্মবিরতির ডাক দেয়। যা বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের মিটিং-এর পরেও ১০ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত তারা চলমান রাখে। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের মিটিং-এর ঘোষনামতে নিয়মিতকরণ কমিটি গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৭২৩ জন লাইনক্রুকে চুক্তিভিত্তিক হতে নিয়মিত করা হয় এবং অন্যান্য দাবী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করে দেয়া হয়।

পবিসের প্রায় ১৮-২০ হাজার কর্মী তাদের অযৌক্তিক দাবী আদায়ের জন্য গতবছরের ৮ আগষ্ট বাপবিবো, ঢাকায় লং-মার্চ করে যেদিন তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শপথ নিতে ঐ পথে ঢাকায় ফিরছিলেন। পরবর্তীতে ২৭ আগস্ট হতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের দাবী আদায় না হওয়ায় গনছুটিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে ছুটির ফরম পূরণ করে।

বাপবিবোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জিয়াউল আজিমের দপ্তরাদেশ উপেক্ষা করে সকল জেলা প্রশাসনের সামনে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী দিতে থাকে। আন্দোলন চলমান রাখতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো হতে শত কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয় । পল্লী বিদ্যুত সমিতির কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ প্রতিবেদকের কাছে বলেন, চাকরিচ্যুতদের অনুসারী কর্মকর্তা-কর্মচারিরা অস্থিতিশীল করার লক্ষে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

আরও পড়ুন…কারও অধিকার নেই অভিযান চালানোর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সারাদেশে ব্ল্যাকআউট পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে ১৭ অক্টোবর ২৪’ তারিখ ২৪ জন কর্মকর্তা-কে চাকুরীচ্যুত করা করা হয় এবং নানা প্রোপাগন্ডা, মিছিল মিটিং অব্যাহত রাখায় আরো কিছু সংখ্যক কর্মকর্তাকে বাপবিবোর্ডের সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন জোনে সংযুক্ত করা হয়। বর্তমানে বিলিং সহকারী (কানামনা) যাদের সকলকে নিয়মিত করা হয়েছে তারা জনপ্রতি ১০ হাজার করে চাঁদা উত্তোলন করে চাকুরী অবসানকৃত নেতাদের দিচ্ছে মামলা পরিচালনা ও আন্দোলন বেগবান করার জন্য।

ব্রাক্ষণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আইটি জনাব মো: আল আমিন এর সমন্বয়ে বিলিং সহকারী রিয়া পাল, রূপা সূত্রধর সকলের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করেছে। এ বিষয়ে জেই আইটি মো: আল আমিন-কে কল করা হলে তিনি বিষয়টি সঠিক নয় মর্মে জানান। বিলিং সহকারী রিয়া পাল প্রতিবেদকের কাছে বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
ইবাংলা বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us