রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও ড. ইউনূস

ইবাংলা ডেস্ক

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ সফরকালে বার্ষিক রমজান সংহতি সফরের অংশ হিসেবে আগামী ১৪ মার্চ জাতিসংঘ মহাসচিবের এই পরিদর্শনের কথা রয়েছে।

Islami Bank

আরও পড়ুন…নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন করতে ইসির আহ্বান

পরিদর্শনকালে গুতেরেস স্থানীয় বাংলাদেশি জনগোষ্ঠী ও মিয়ানমারে নিপীড়ন ও সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে ইফতার করবেন। যা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার বাংলাদেশের উদারতার স্বীকৃতি।

প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে জানান, প্রধান উপদেষ্টা ১৪ মার্চ সকালে কক্সবাজারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং একই দিন সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।

রমজানের প্রতি সংহতি সফরের অংশ হিসেবে অ্যান্তোনিও গুতেরেস ১৩ থেকে ১৬ মার্চ ঢাকা সফর করবেন। এসময় তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছেন গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।

বাংলাদেশ সফরকালে তিনি ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের পাশাপাশি সুশীল সমাজের তরুণ প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবেন।

জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার হিসেবে এক দশকের দীর্ঘ মেয়াদে জাতিসংঘ মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বাস্তুচ্যুত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে নিয়মিত রমজান পালন করার জন্য সংহতি সফরকে একটি বার্ষিক ঐতিহ্যে পরিণত করেছেন গুতেরস।

গুতেরেস এক বার্তায় বলেন, “প্রতি রমজানে আমি বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংহতি সফর করি এবং রোজা রাখি। এই মিশন বিশ্বকে ইসলামের আসল চেহারা মনে করিয়ে দেয়।”

one pherma

তিনি আরও বলেন, “রমজান করুণা, সহানুভূতি এবং উদারতার মূল্যবোধকে তুলে ধরে। এটি পরিবার এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুনর্মিলনের একটি সুযোগ…। আমি সবসময় এই মৌসুমে অসাধারণ শান্তির অনুভূতিতে আরও অনুপ্রাণিত হই।”

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস সম্প্রতি ড. ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে আশা প্রকাশ করেন যে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন বৈশ্বিক অগ্রাধিকারকে নবায়ন করবে এবং তাদের দুর্দশার বৃহত্তর সমাধানকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।গুতেরেস বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত করতে তার তৎপরতা অব্যাহত রাখবে।

তিনি লিখেছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিসহ মিয়ানমারের সংকটের রাজনৈতিক সমাধানে আমি আমার সদিচ্ছা অব্যাহত রাখব। সেই লক্ষে আঞ্চলিক পক্ষ, অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

আরও পড়ুন…মার্ক কার্নি কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘ মহাসচিব রাখাইনের জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা ও জীবিকার সহায়তা কীভাবে সর্বোচ্চ করা যায়-সে বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমগুলোকে দিকনির্দেশনা দিতে তার জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপকদের অনুরোধ করেছেন।

জাতিসংঘ মিয়ানমারের সমন্বয়কারী এবং আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারীর সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিখার দেবে। যার মাধ্যমে রাখাইন এবং পুরো মিয়ানমারে অভাবী লোকদের জন্য জরুরি ত্রাণ, নিরাপদ, দ্রুত, টেকসই এবং অবাধ মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা যায়।তিনি বলেন, “জাতিসংঘ ব্যবস্থা কীভাবে প্রক্রিয়াটিকে সর্বোত্তমভাবে সমর্থন করতে পারে-তা বোঝার জন্য আমরা সদস্য রাষ্ট্রের পরামর্শের পরে সম্মেলনের সম্মত ফলাফল এবং পরিকল্পনার জন্য অপেক্ষা করছি।”

তিনি চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসকে তার চিঠির জন্য ধন্যবাদ জানান। যেটি ৭ ফেব্রুয়ারি রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান তার কাছে পৌঁছে দেন।জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় তাদের সমর্থনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলে রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব এবং রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন তিনি।
ইবাংলা বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us