মিয়ানমার-থাইল্যান্ডে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প: নিহত শতাধিক

ইবাংলা ডেস্ক

মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৭০ জন নিখোঁজ থাকার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২ টা ৫০ মিনিটে ভূমিকম্পের আঘাতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির।

Islami Bank

মিয়ানমারের মান্দালয়ে অবস্থিত একটি উদ্ধারকারী দলের একজন সদস্য বিবিসিকে বলেছেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক বেশি। হতাহতদের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি, তবে এটি অন্তত শতাধিক।

তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমারে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। জানা গেছে, শুক্রবারের নামাজের সময় মান্দালয় অঞ্চলের শ্বেফোশিং মসজিদ ধসে অন্তত ২০ জন এবং টাংগু শহরের একটি মঠ ধসে পড়ে আরও অনন্ত পাঁচজন বাস্তুচ্যুত শিশু নিহত হয়েছেন।

একজন উদ্ধারকর্মী বলেন, নামাজের সময় প্রায় তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে। সেখানে মানুষ আটকা পড়ে। এতে অন্তত ২০ জন মারা গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।এ ছাড়া সংবাদ মাধ্যমটির তথ্যমতে, থাইল্যান্ডে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পের তীব্রতা অনুভূত হয়েছে প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও চীনেও।

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে নির্মাণাধীন একটি ৩০তলা ভবন ধসে ৭০ নির্মাণকর্মী নিখোঁজ রয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ভবনটি নিমিষেই ধসে পড়তে দেখা যায়। এ ছাড়া আরেকটি ভিডিওতে বহুতল ভবনের সুইমিং পুল থেকে পানি ছিটকে পড়তেও দেখা যায়।

কম্পনের সময় ব্যাংককের বাসিন্দারা উঁচু ভবন থেকে বেরিয়ে রাস্তায় জড়ো হন। সেখানকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কম্পন যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল। শহরটির কিছু মেট্রো এবং রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন…ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন জামায়াত আমির

one pherma

থাই প্রধানমন্ত্রী পেতোংটার্ন শিনাওয়াত্রা এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছেন, শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরে তিনি একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন। এ কারণে তিনি দক্ষিণ দ্বীপ ফুকেটে একটি সরকারি সফর স্থগিত করেছেন।

জানা গেছে, দুই দেশেই অনেক বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। সেগুলোতে আটকা পড়েছেন অনেকে। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশ দু’টির সরকার।

এদিকে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের ঔপনিবেশিক আমলের একটি সেতু ধসে পড়েছে। ভেঙে পড়া ৯১ বছর বয়সী আভা নামের সেতুটি ব্রিটিশদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। পুরাতন সাগাইং সেতু নামেও পরিচিত সেতুটি মান্দালয় এবং সাগাইং অঞ্চলের মধ্যে ইরাবতী নদীর ওপর বিস্তৃত।

ভূমিকম্পের তীব্রতায় দেশটির রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। স্তব্ধ হয়ে পড়েছে জনজীবন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মান্দালয় প্রাসাদও। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকার বহু ভবন ধসে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোর একটি প্রধান হাসপাতালে বহু আহত ব্যক্তিকে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ভূমিকম্পের ফলে সমস্যা দেখা দিয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্কেও। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ভবন ও সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা গেছে।

ইউএসজিএস জানিয়েছে, পরপর দুটি কম্পন আঘাত হানে অঞ্চলটিতে। ৭.৭ মাত্রার প্রথম কম্পনটি স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার (১০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে। এ ছাড়া প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পরে দ্বিতীয় কম্পন অনুভূত হয়, যার মাত্রা ছিল ৬.৪।
ইবাংলা বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us