দুর্ঘটনার ৩৯ বছর আজ চেরনোবিল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সূত্র: যমুনা টিভি
আজ শনিবার (২৬ এপ্রিল) চেরনোবিল দুর্ঘটনার ৩৯ বছর। ১৯৮৬ সালের এই দিনে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল শহরে ঘটেছিল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। পারমাণবিক চুল্লির এ দুর্ঘটনাকে স্মরণকালের অন্যতম বড় বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়।২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ সভায় ২৬ এপ্রিলকে ‘আন্তর্জাতিক চেরনোবিল বিপর্যয় স্মরণ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

Islami Bank

বর্তমানের ইউক্রেন, সে সময় ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে। চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লি ছিল চারটি। এই দিনে চতুর্থ পারমাণবিক চুল্লিতে নিরাপদ শীতলীকরণের ওপর একটি পরীক্ষা চালানোর সময় দুর্ঘটনা ঘটে।

রাতের শিফটে দায়িত্বরত কর্মীরা ভুল করে পারমাণবিক চুল্লির টার্বাইনে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি দিলে বাষ্প কম উৎপাদিত হয়। ফলে চুল্লি উত্তপ্ত হয়ে একপর্যায়ে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। দুর্ঘটনার পরপরই পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। গ্রাস করে ২ হাজার ৬০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা।

চেরনোবিলের এ ঘটনায় হিরোশিমা ও নাগাসাকি থেকেও ৪০০ গুণ বেশি তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়। তেজস্ক্রিয়তা রাশিয়া, ইউক্রেন ও বেলারুশের ১ লাখ ৫৫ হাজার বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন…যুদ্ধে জড়াচ্ছে কি ভারত-পাকিস্তান

one pherma

বলা হয়ে থাকে সে সময় এই দুর্ঘটনার তেজস্ক্রিয়তার কু-প্রভাব চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও টের পাওয়া গিয়েছিল।দুর্ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে ২ জন মারা যায়। পরবর্তীতে এক মাসের মধ্যে আরও ২৯ জনের মৃত্যু হয়। আর এটার প্রভাব পড়ে লাখ লাখ মানুষের ওপর।

তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৮ হাজার মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। প্রায় ৪ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়। আর দুর্ঘটনা কবলিত চেরনোবিলকে ২০ হাজার বছরের জন্য বসবাসের অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়।

এখন পর্যন্ত চেরনোবিলের সেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারদিকে ৩০ কিলোমিটার জায়গা নিষিদ্ধ এলাকা। এই জায়গাটি এখন এক ভুতুড়ে, পরিত্যক্ত শহর। সেখানকার ২ হাজার ৬০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিক বন এবং বন্য প্রাণীদের অভয়ারণ্য।

উল্লেখ্য, তেজস্ক্রিয়তা সত্ত্বেও ২০১১ সালে ইউক্রেন সরকার এক্সক্লুশন জোন বা প্রবেশ নিষিদ্ধ এলাকাটিকে ১৮ বছরের বেশি বয়সী পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়। তখন থেকে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ মানুষ এই পরিত্যক্ত এলাকাটি দেখতে যেতেন। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করার পর থেকে সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
ইবাংলা বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us