লন্ডনে চার মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে সরাসরি গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজায়’ উঠবেন তিনি। আর সেজন্যই বেগম জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে সকাল থেকেই ফিরোজার সামনে নেতাকর্মীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল থেকেই গুলশানের বাসভবনের সামনে আসতে থাকেন নেতাকর্মীরা। ফিরোজা ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।দলীয় পতাকা হাতে নেতাকর্মীদের অনেকে বলছেন, দেশনেত্রী ফিরছেন, এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় স্বস্তি। কেউ কেউ আবার ফিরোজার সামনে থেকে ফেসবুকে লাইভ করছেন।
শুধু ফিরোজা নয়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরেও হাজার হাজার নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। এদিন ভোরের আলো ফোটার পর থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর সড়কে জড়ো হতে শুরু করেন।
এ ছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানী, খিলক্ষেত, বিমানবন্দরে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। তারা পিকআপ কিংবা বাসে করে গান বাজাতে-বাজাতে দল ও দেশের পতাকা নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন নেত্রীকে স্বাগত জানাতে।
এ সময় তাদেরকে ‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দর এলাকায় অতিরিক্ত জনসমাগমের সম্ভাবনা থাকায় ট্রাফিক পুলিশেরও ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেছে।
আরও পড়ুন…ফিরোজার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন খালেদা জিয়া
দলীয় সূত্র জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি অবস্থান করবে বিমানবন্দর থেকে লা মেরিডিয়েন হোটেল পর্যন্ত এলাকায়। ছাত্রদল অবস্থান করবে লা মেরিডিয়েন হোটেল থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত এলাকায়।
যুবদল অবস্থান করবে খিলক্ষেত থেকে হোটেল র্যাডিসন পর্যন্ত এলাকায়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি অবস্থান করবে হোটেল র্যাডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম পর্যন্ত এলাকায়।
স্বেচ্ছাসেবক দল অবস্থান করবে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত এলাকায়। কৃষক দল অবস্থান করবে বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড় পর্যন্ত এলাকায়।
শ্রমিক দল অবস্থান করবে কাকলী মোড় থেকে বনানীর শেরাটন হোটেল পর্যন্ত এলাকায়। ওলামা দল, তাঁতী দল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল অবস্থান করবে শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার পর্যন্ত এলাকায়।
পেশাজীবী সংগঠনগুলো অবস্থান করবে বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান-২ পর্যন্ত এলাকায়। মহিলা দল অবস্থান করবে গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত এলাকায়।
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি ও এর বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তার দুইধারে অবস্থান নিয়ে নেত্রীকে স্বাগত জানাতে হবে।
সব নেতাকর্মীদের দলীয় পতাকা ও জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার এক পাশে দাঁড়াতে হবে। গাড়ি বহরের সঙ্গে মোটরসাইকেলে যাওয়া যাবে না। হেঁটেও যাওয়া যাবে না।এছাড়া বিমানবন্দর ও বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসা ফিরোজায় কেউ ঢুকতে পারবেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন।সেটিতে করেই তিনি লন্ডনে যান। একইভাবে কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন তিনি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.