লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফার ময়দান

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ৯ জিলহজ—ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে সারা বিশ্বের মুসলমানেরা পবিত্র আরাফার ময়দানে সমবেত হন মহান আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। চারিদিকে ধ্বনিত হয় হৃদয় নিংড়ানো সেই ঐশী বাক্য:

Islami Bank

“লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…”
“হে আল্লাহ! আমি হাজির, আমি আপনার ডাকে সাড়া দিলাম। আপনি একক, আপনার কোনো শরিক নেই।”

আরাফার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
পবিত্র হজের মূল রুকন হলো ‘ওকুফে আরাফা’। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:

“الحج عرفة”
অর্থ: “হজ মানেই আরাফা।” (তিরমিযি)

হাজি যদি নির্ধারিত সময়ে আরাফার ময়দানে না পৌঁছান, তাহলে হজ পূর্ণ হয় না।

ইতিহাসের পাতায় আরাফা
আরাফার ময়দান ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। এখানেই রাসুলুল্লাহ (সা.) হিজরি ১০ সনে তাঁর বিদায়ী হজে ভাষণ দেন, যেখানে তিনি মানবাধিকারের মূলনীতিগুলো ঘোষণা করেন:

জাতি, বর্ণ, ধন-সম্পদের ভেদাভেদ নেই।

সকল মুসলমান ভাই ভাই।

নারীদের সম্মান ও অধিকার রক্ষার নির্দেশ।

হাজিদের আনুষ্ঠানিকতা
সকাল থেকেই হাজিরা মিনার তাঁবু থেকে রওনা হন আরাফার দিকে। দুপুরে নামিরা মসজিদে হজের খুতবা হয় এবং জুহর ও আসর নামাজ একত্রে আদায় করা হয়। এরপর হাজিরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া, কান্না, তাওবা ও ইবাদতে মগ্ন থাকেন।

one pherma

লাব্বাইক—এক আত্মিক আহ্বান
“লাব্বাইক” ধ্বনির মাধ্যমে হাজিরা ঘোষণা করেন—
“হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমার অনুগত বান্দা। আমি এসেছি তোমার আহ্বানে।”

এই শব্দগুচ্ছ শুধু আওয়াজ নয়, এটি ঈমান, আনুগত্য ও আত্মসমর্পণের বহিঃপ্রকাশ।

পরবর্তী গন্তব্য: মুজদালিফা
সূর্যাস্তের পর হাজিরা রওনা হন মুজদালিফার উদ্দেশে, সেখানে রাত যাপন করে পরদিন জামারাতে (শয়তানকে) পাথর নিক্ষেপ করেন।

নিরাপত্তা ও সেবা
২০ লাখের বেশি হাজি অংশ নিচ্ছেন এবারের হজে।

সৌদি প্রশাসন মোতায়েন করেছে চিকিৎসা ও নিরাপত্তা সেবা।

সর্বত্র রয়েছে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবু, বিশুদ্ধ পানি ও মেডিকেল টিম।

বিশ্ব সম্প্রচার
মসজিদে নামিরার খুতবা সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে ১০০টিরও বেশি ভাষায়। কোটি মুসলমান তা প্রত্যক্ষ করেছেন অনলাইনে ও স্যাটেলাইট টিভিতে।

আরাফার দিনে রোজার ফজিলত
যারা হজে নেই, তাদের জন্য এই দিনেও রোজা, দোয়া, কোরআন তিলাওয়াত ও ইস্তিগফার করার মাধ্যমে গুনাহ মাফের এক সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।

রাসুল (সা.) বলেন:
“আরাফার দিনের রোজা, বিগত ও পরবর্তী বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়।” (সহিহ মুসলিম)

اللهم تقبل منا حجنا واغفر لنا ذنوبنا، ووفقنا لزيارة بيتك الحرام مراراً وتكراراً
হে আল্লাহ! আমাদের হজ কবুল করুন, গুনাহ মাফ করুন, এবং বারবার আপনার ঘরের যিয়ারতের তাওফিক দিন।
ইবাংলা বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us