জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা ও যোগ্যতা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বুধবার (০১ ডিসেম্বর) দুপুরে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠান’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ‘রূপকল্প-২০৪১’ অভিযাত্রাকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রয়োজন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম, দক্ষ ও মেধাবী জনশক্তি তৈরি করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ যাত্রাপথে নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকবে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপ্রধান।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, কালের পরিক্রমায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে এর অবকাঠামো ও শিক্ষা কার্যক্রমের পরিধি। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে প্রতিযোগিতারও আন্তর্জাতিকীকরণ হয়েছে। তাই একজন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান অর্জন করতে হবে।শিক্ষার্থীদের জন্য মাতা-পিতা, অভিভাবক, দেশ ও জনগণের যথেষ্ট বিনিয়োগ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে পবিবার, দেশ ও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে বর্তমান শতাব্দীতে উন্নয়নশীল বিশ্বে উচ্চশিক্ষার গতি-প্রকৃতি, বিশ্বায়ন ও তথ্য-প্রযুক্তির প্রসারে সৃষ্ট ডিজিটাল বিভক্তি, উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বের ব্যবধান মোকাবিলা এবং পুঁজি ও শ্রমনির্ভর অর্থনীতি থেকে জ্ঞান নির্ভর-অর্থনীতিতে উত্তরণে এগুলোকে শিক্ষার প্রধান বিবেচ্য হিসেবে ভাবার তাগিদ জানান।
আবদুল হামিদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালি জাতির শিক্ষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, গবেষণা-উদ্ভাবন, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, প্রগতিশীল ভাবনা, জাতি-গঠন ও দেশাত্মবোধের চেতনার এক তেজোদীপ্ত আলোকবর্তিকা; বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার এক অনন্য বাতিঘর।
তিনি বলেন, মাত্র দুইজন নারী শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে ছাত্রীর সংখ্যা ৪০ শতাংশের বেশি। এটা দেশের নারীর ক্ষমতায়নের একটি বিশাল সাফল্য।একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্বের সকল জাতিসত্তার ভাষা-সংস্কৃতি সংরক্ষণে একুশে ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিকভাবে মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থক, বিদেশি বন্ধু, যুদ্ধাহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যসহ সর্বস্তরের জনগণকে, যাদের অসীম সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ দেশ ও স্বাধীন জাতিসত্তা।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ বক্তব্য রাখেন।
ইবাংলা / নাঈম/ ১ডিসেম্বর, ২০২১