প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সদ্য পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ হাসানকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। দল থেকে বহিষ্কার হলে তার সংসদ সদস্য পদও হারাতে হবে।
সংবিধান অনুযায়ী কোনো দল থেকে নির্বাচিত কোনো সংসদ সদস্য ওই দলের প্রাথমিক সদস্য পদ হারালে তিনি আর সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারেন না। অথবা তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে এবং তিনি বিচারিক আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যায়।
মন্ত্রীসভা থেকে সদ্য পদত্যাগী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান জাতীয় সংসদের জামালপুর-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেওয়ায় মুরাদ হাসানকে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীসভা থেকে মঙ্গলবারের (৭ ডিসেম্বর) মধ্যে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।
এদিকে মন্ত্রীসভা থেকে বাদ পড়ার পর এখন আওয়ামী লীগ থেকেও তার বহিষ্কার নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। ফলে তার সংসদ সদস্য পদও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, মন্ত্রীসভা থেকে বাদ পড়া মুরাদ হাসান আওয়ামী লীগ থেকেও বাদ পড়তে পারেন। তাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। বিষয়টি দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে আলোচনাও চলছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পরিবারের এক সদস্যকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্য এবং এক চিত্র নায়িকার সঙ্গে ফোনে ডা. মুরাদ হাসানের কথা বলার ভিডিও-অডিও সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু এই বিষয়টি নয়, এর বাইরেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য ও মন্তব্য করে সম্প্রতি তিনি আলোচনা-সমালোচনায় উঠে আসেন।
এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রীদের নিয়েও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় সরকার ও আওয়ামী লীগ বিব্রত ও অস্বস্তিতে পড়ে। এ ধরনের একজনকে দলের রাখা হবে কি না তা নিয়েও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন আলোচনা ও গুঞ্জন চলছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা জানান, দলের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে সেটা তদন্ত হয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হলে তিনি যত বড়ই নেতা হোন না কেন, তাকে শাস্তি পেতে হয়। অতীতে এর উদাহরণ যথেষ্ট রয়েছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা জানান, দলে শৃঙ্খলার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। দলে যে যতই গুরুত্বপূর্ণ নেতা হন বা যতই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকুন, শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে এবং অভিযোগ প্রমাণ হলে তাকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
ইবাংলা / টিআর/৮ ডিসেম্বর ২০২১