আইজিপিসহ ৬ পুলিশকর্তাকে নিষেধাজ্ঞার নেপথ্যে!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মার্কিন অর্থ দফতরের ‘ফরেন অ্যাসেটস কনট্রোল অফিস’ (ওএফএসি) বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মোট ১০টি প্রতিষ্ঠান ও ১৫ জন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে – যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নিপীড়নের সাথে সংশ্লিষ্ট বলে নিষেধাজ্ঞায় উল্লেখ করা হয়েছে।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এই ‍নিষেধাজ্ঞায় দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা চলছে।  কিন্তু হঠাৎ করে বাংলাদেশের পুলিশ ও র‌্যাবের প্রধান ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ছয় কর্মকর্তার ওপর এমন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ।

মার্কিন অর্থ দফতরের ওয়েবসাইটে নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে যে র‌্যাব এবং অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ২০০৯ সাল থেকে প্রায় ৬০০টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ৬’শত এরও বেশি লোকের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, এবং বিভিন্ন নির্যাতনের জন্য দায়ী।

বিচারবহির্ভূত হত্যা, অন্তর্ধান ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয় র‌্যাবের বিরুদ্ধে। কিছু রিপোর্টে আভাস পাওয়া যায় যে এসব ঘটনায় বিরোধীদলীয় সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের টার্গেট করা হয়েছে – বলা হয় এই বিজ্ঞপ্তিতে।

এতে বলা হয়, “বাংলাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র‌্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের ব্যাপক অভিযোগ – আইনের শাসন, মানবাধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা, ও বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে হেয় করার মাধ্যমে – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থকে হুমকির মুখে ফেলছে।”

মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাবে ছয়জন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তার ফলে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না। এরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য বিবেচিত হবেন অযোগ্য বলে। আর র‌্যাবও প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কাছ থেকে যেসব সহযোগিতা পাচ্ছিলো সেগুলো বাতিল হতে পারে।

একইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত বেনজির আহমেদ ও র‌্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ র‌্যাবের আরও চারজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার বিদেশে সম্পদ থাকলে সেগুলো বাজেয়াপ্ত হতে পারে।

তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওই অভিযোগ অস্বীকার করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, “ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করা হয়। কোনো সংস্থার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

আরও পড়ুন : র‌্যাব ও পুলিশ প্রধানসহ ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ঢাকা ওয়াসার বুড়িগঙ্গা হলে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অতিরঞ্জিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

আমাদের কোনো সংস্থা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না। করলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা চ্যালেঞ্জিং। মাদক কারবারিরা নিজেদের রক্ষা করার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। দেশের প্রশিক্ষিত বাহিনী অভিযান চালালে তারা অস্ত্র ব্যবহার করায় গোলাগুলি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ইবাংলা /টিপি /১১ ডিসেম্বর ২০২১

Comments (0)
Add Comment