বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে চীন যে মনোভাব প্রকাশ করেছে তা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। চীনা রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক বক্তব্যে দেশটির প্রকাশিত মনোভাবে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
চীনের প্রতি বিএনপি ও দেশবাসীর প্রত্যাশা- অবাধ নির্বাচন, মানবাধিকার তথা গণতন্ত্রের স্বার্থে ও দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের জনগণের বন্ধুত্বের স্বার্থে গণবিরোধী ও গণবিচ্ছিন্ন জবরদস্তিমূলক এই সরকারের পাশে নয়; দেশের প্রকৃত মালিক জনগণের পাশেই তারা সব সময় দাঁড়াবে।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বিএনপির উপরোক্ত অবস্থান জানানো হয়। ঢাকাস্থ চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়।
বিবৃতিতে বিএনপির মুখপাত্র রিজভী আহমেদ বলেন, সামাজিক গণমাধ্যমে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক ভিডিও বক্তব্য বিএনপির নজরে এসেছে। বাংলাদেশ ও বর্তমান সরকার সম্পর্কে তার মূল্যায়ন ও মন্তব্যে গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর মতো আমরাও ক্ষুব্ধ এবং বিস্মিত।
রিজভী আহমেদ বলেন, বহু ত্যাগের বিনিময়ে আমরা জনগণের সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয় গণতন্ত্র, প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা, জবাবদিহিতা ও বাক-স্বাধীনতার মতো মৌলিক নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলাম।
নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে জনগণ চর্চা করেছিল তাদের ভোটাধিকার। কিন্তু ক্ষমতাসীন এই সরকার তা ধ্বংস করে চলেছে প্রতিনিয়ত। বর্তমানে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত। অর্জিত সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা আদায়ের সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের পথে বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীই আজ সবচেয়ে বড় বাধা।
সরকারের কর্তৃত্ববাদী এই আচরণের কারণে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি আজ একটি গণধিকৃত ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, চীন তার নিজ দেশে কী ব্যবস্থা বহাল রাখবে তা একান্তই তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ঐতিহ্যগতভাবে অবাধ নির্বাচন ও প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার চর্চার মাধ্যমে তাদের রাষ্ট্রীয় মালিকানা চর্চা করেছে ও করবে।
কেননা প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার প্রয়োগই হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ এবং জনগণের ক্ষমতা চর্চার একমাত্র মাধ্যম। যার মাধ্যমেই রাষ্ট্র জনগণের কাছে জবাবদিহিতায় আবদ্ধ থাকে। এটাই জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গণতন্ত্র চর্চার সার্বজনীন পন্থা।
ইবাংলা /টিআর /১২ ডিসেম্বর ২০২১