পুলিশে চাকরির সাধারণ নারী কোটায় মেধাতালিকায় হয়েছিলেন প্রথম। কিন্তু এবারও স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় পুলিশে চাকরি পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছে খুলনার মিম আক্তার। পুলিশ ভেরিফিকেশনে স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় তাকে চাকরি দেওয়া যাচ্ছে না বলে খুলনার পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে শনিবার তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
মিম বলে “পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় আবেদনের পর ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর তিন দিন শিরোমণি পুলিশ লাইন্সে শারীরিক যোগ্যতা যাচাই হয়। যাচাইয়ে আমি উত্তীর্ণ হই। এরপর লিখিত ,মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। পরে জানতে পারি আমি মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছি”
আরেও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্থায়ী আবাস পাচ্ছে আছপিয়া
পরে খুলনা জেলা পুলিশ লাইন্সে সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সেখানেও উত্তীর্ণ হন মিম। এরপর পুলিশ ভেরিফেকিশন শুরু হয়। মিমি জানায় “ভূমিহীন সার্টিফিকেট জমা দিয়েছি আমি । পুলিশ লাইন্সে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্টও দিয়ে এসেছিলাম। পরে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে কথা থাকলেও আর কিছুই জানানো হয়নি আমকে।
মিম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “যারা আমার সাথে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে এসেছিল তাদের ফোন করে চাকরির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু আমাকে কিছু না জানানোর কারণে আমি শুক্রবার জেলা পুলিশ লাইন্সে গিয়েছিলাম। তারা কিছুই জানেন না জানিয়ে এসপি স্যারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
“শনিবার খুলনার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়েছি। পুলিশ সুপার স্যারকে পাইনি। দুই-তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভির আহম্মেদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তিনি বলেছেন, তোমার সব ঠিক আছে। তবে স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় তোমাকে চাকরিটা আমরা দিতে পারছি না।”
মিম খুলনা শহরের সোনাডাঙ্গায় ৩ নম্বর আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডের ডাক্তার বাবর আলীর বাড়ীর ভাড়াটিয়া। তার বাবা রবিউল ইসলাম শহরে একটি ভাড়া দোকানে লেপতোশক বিক্রি করেন।মিময়ের বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, “আমার মেয়ের জন্ম খুলনায়। এখানে আমার নিজস্ব জমি নেই। ১৯৮৮ সাল থেকে ভাড়াটিয়া হিসেবে খুলনায় বসবাস করে আসছি। গত ১৭ মাস ধরে বাবর আলীর বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বাস করছি।
এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মেদ বলেন- “মেয়েটা সব দিক দিয়েই পারফেক্ট। মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছে। তবু পুলিশের রুলসের কারণে আমরা তাকে নিতে পারছি না। জন্ম এখানে হলে বা জন্ম সনদ এখানে থাকলেই হবে না। স্থায়ী ঠিকানা লাগবে। আইনের বাইরে আমরা কিছু করতে পারি না। ঘটনাটি বরিশালের আসপিয়ার ঘটনার মতই।”
‘স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় পুলিশে চাকরি না পাওয়ার শঙ্কায় আসপিয়া’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে খবর প্রকাশিত হয়। আসপিয়ার পরিবারেরও জমি নেই। চাকরির পরীক্ষায় কয়েকটি স্তর পার হয়ে তিনি জানতে পারেন, স্থায়ী ঠিকানা না থাকলে পুলিশে চাকরি হয় না।
ইবাংলা /টিপি/১২ ডিসেম্বর ২০২১