রাজশাহী পুলিশে কর্মরত ইফতেখার আল-আমিন (৩৫) নামে সেই এসআইয়ের কেটে ফেলা পুরুষাঙ্গ জোড়া লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এদিকে, এ ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তার স্ত্রীর নামে মামলা হয়েছে এবং শুক্রবার সকালে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একুশে টিভি
জানা যায়, গুরুতর আহত পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখার আল-আমিনকে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে অপারেশন করে তাঁর কেটে ফেলা পুরুষাঙ্গ জোড়া লাগানোর চেষ্টা করা হয়। তবে চিকিৎসকরা তাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তাঁকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেয়া হয়। পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হলে রাতেই তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। কিন্তু কেটে ফেলে পুরুষাঙ্গ জোড়া দিতে ব্যর্থ হয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, এসআই ইফতেখার আল আমিন রাজশাহী নগরের মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি ২০১০ সালে উপপরিদর্শক (এসআই) পদে চাকরিতে ঢোকেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। তার স্ত্রী রুপসী দেওয়ানের বাবার বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। তাঁরা রাজশাহী নগরের সাগরপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে বাসাতেই ঘুমিয়ে ছিলেন ইফতেখার। এ সময় স্ত্রী চাকু দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ কেটে খাটের নিচে ময়লার ঝুড়িতে লুকিয়ে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ইফতেখারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং সন্ধ্যায় তার অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শে দিবাগত রাত ২টার দিকে তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেয়া হয়।
এদিকে, পুলিশের কাছে ইফতেখার আল আমিনের স্ত্রী রুপসী দেওয়ান স্বামীর লিঙ্গ কর্তনের কথা স্বীকার করেছেন। লিঙ্গের খণ্ডিত অংশও বের করে দেন তিনি। অন্য নারীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে তোলায় ক্ষুব্ধ হয়েই তিনি এ কাজ করেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। ঘটনার পরই তাঁকে (রুপসী) আটক করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ইফতেখারের স্ত্রীর অভিযোগ, অন্য নারীদের সঙ্গে তাঁর স্বামীর সম্পর্ক ছিল। এই ক্ষোভে তিনি স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেন।
পুলিশের কাছে আগে কেন অভিযোগ করা হয়নি- এমন প্রশ্নের জবাবে রুপসী দেওয়ান জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী তো ‘জাদুকর’! তাঁকে ধরা যায় না। এই ধরনের অভিযোগ করলে কেউ বিশ্বাস করবে না। কিন্তু তাঁর উপায় ছিল না। বাধ্য হয়েই তিনি এমন কাজ করেন।
ওসি নিবারণ আরও বলেন, এ ঘটনায় এসআই ইফতেখার আল আমিনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেই ইফতেখারের বাবা বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার সকালে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ইবাংলা এইচ/১৪ ডিসেম্বর,২০২১