মালদ্বীপের সঙ্গে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দ্বৈত কর, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি চুক্তিতে সই করেছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) মালদ্বীপ প্রেসিডেন্টের দফতরে এগুলো সই হয়।
মালদ্বীপ প্রেসিডেন্ট দফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহর উপস্থিতিতে এসব এমওইউ ও চুক্তি সই হয়।
১. দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগে মালদ্বীপের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমওইউ সই। দুই দেশের পক্ষে এমওইউতে সই করেন মালদ্বীপের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহমেদ নাসিম ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
২. স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসাবিজ্ঞানে মালদ্বীপের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা একটি এমওইউ নবায়ন। দুই পক্ষে এমওইউতে সই করেন মালদ্বীপের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহমেদ নাসিম ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
৩. যুব ও ক্রীড়া উন্নয়নে সহযোগিতা নিয়ে মালদ্বীপের যুব, ক্রীড়া ও কমিউনিটি ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এমওইউ। দুই পক্ষে এমওইউতে সই করেন মালদ্বীপের যুব, ক্রীড়া ও কমিউনিটি ক্ষমতায়ন মন্ত্রী আহমেদ মাহলুফ এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
৪. আয়করের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর বাতিল এবং কর এড়ানো ও কর ফাঁকি রোধে মালদ্বীপ ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি। এতে সই করেন মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব কর্তৃপক্ষের (এমআইআরএ) কমিশনার জেনারেল অব ট্যাক্সেশন ফাতুহুল্লাহ জামিল এবং বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
একই অনুষ্ঠানে বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে মালদ্বীপকে উপহার দেয়া ১৩টি সামরিক যানের নথি হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছয় দিনের রাষ্ট্রীয় সফরসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে তাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানায় মালদ্বীপ।
রাজধানী মালেতে মালদ্বীপ প্রেসিডেন্টের জেটিতে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে স্বাগত জানান দ্বীপদেশটির রাষ্ট্রপ্রধান ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে পারফরম্যান্স করে মালদ্বীপের স্কুলশিক্ষার্থীরা।
মালদ্বীপ প্রেসিডেন্ট দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে ২১টি গান স্যালুট দেয় মালদ্বীপের জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী (এমএনডিএফ)। দেশটির সামরিক ব্যান্ড দল দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজায়।
গার্ড অব অনারের সময় মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসিমসহ সফরকারী দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অভ্যর্থনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নেয়া হয় প্রেসিডেন্টের দফতরে। সেখানে দর্শনার্থীদের জন্য রাখা বইয়ে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে সলিহর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নেন শেখ হাসিনা। দুজনের বৈঠক শেষে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেয় দুই দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধানসহ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
পরবর্তী সময়ে যৌথ বিবৃতি দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এর আগে বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে মালদ্বীপের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী।
স্থানীয় সময় বেলা ৩টার দিকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিশেষ ফ্লাইটটি মালের ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান মালদ্বীপের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আহমেদ খলিল।
ইবাংলা/জেডআরসি/২৩ ডিসেম্বর, ২০২১