আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীর চিকিৎসা

ইবাংলা ডেস্ক

প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের অগ্নিকাণ্ডে শত শত মানুষ হতাহত হয়। অগ্নিকাণ্ডের খুটিনাটি বিষয় সম্পর্কে মানুষের পরিষ্কার ধারণা না খাকায় এসব দুর্ঘটনায় ক্ষতির পরিমান বেশি হয়। পাশাপাশি আগুনে আহতদের জীবন রক্ষার্থে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে গণমানুষের ধারণা থাকাটাও জরুরি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য মতে, বড়দের ক্ষেত্রে শরীরের ১৫ শতাংশ এবং শিশুদের ক্ষেত্রে যদি শরীরের ১০ শতাংশ পুড়ে যায় তাহলে তা ঝুঁকিপূর্ণ বলে ধরা হয়। কেউ অগ্নিকান্ডের শিকার হলে কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রচুর পানি ঢালুন: আগুনে পোড়ার প্রথম আধাঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় রোগীর শরীরে যত বেশি সম্ভব পানি ঢালতে হবে। শুধু পানি ঢাললেই পোড়ার পরিমাণ কমিয়ে আনা যেতে পারে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বহমান ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পোড়া জায়গা অন্তত ২০ মিনিট ধরে ধুতে হবে। তবে বরফ, বরফ শীতল পানি কোনো ধরণের ক্রিম ও তৈলাক্ত পদার্থ যেমন মাখন দেওয়া যাবে না।

কাপড় ও গহনা খুলে ফেলুন: কেউ অগ্নিকাণ্ডের শিকার হলে তার পরিহিত কাপড় ও গহনা যত দ্রুত সম্ভব খুলে ফেলতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে ন্যাপি কিংবা ডায়াপার থাকলে সেটি খুলে ফেলতে হবে। কিন্তু পোড়া চামড়া বা পেশীর সঙ্গে যদি কোনো ধাতব পদার্থ বা কাপড়ের টুকরো আটকে গিয়ে থাকে তাহলে তা সরানোর চেষ্টা করা যাবে না। এক্ষেত্রে ক্ষত আরো বেশি বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

পানি ঢালার পর রোগীর শরীর গরম রাখার চেষ্টা করতে হবে যাতে হাইপোথারমিয়া না হয়। সেক্ষেত্রে কম্বল দিয়ে তাকে জড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে। তবে শরীরের যে অংশ পুড়ে গেছে সেখানে যাতে কোনো ধরণের কাপড় না থাকে সেটি খেয়াল রাখতে হবে।

যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে: আগুনে পোড়োর পর প্রথম ২৪ ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে মধ্যে হাসপাতালে নেওয়া গেলে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যদি রোগীর মুখ কিংবা চোখ পুড়ে যায় তাহলে রোগীকে যতক্ষণ সম্ভব সোজা করে বসিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে। এতে ফোস্কা পড়া বা ফুলে যাওয়া কমে যায়।

টুথপেস্ট, লবণ, ডিমের সাদা অংশ দেওয়া যাবে না: পোড়া রোগীকে তার ক্ষত স্থানের উপর টুথপেস্ট, লবণ বা ডিমের সাদা অংশ দেওয়া যাবে না। এটি প্রাথমিকভাবে জীবাণুমুক্ত থাকলেও পরবর্তীতে এটাকে সংক্রমণের দিকে ঠেলে দেয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর এই জিনিসগুলোকে পরিষ্কার করা হয়। আর তখন এগুলো জমাট বেঁধে থাকে বলে চামড়া উঠে আসার শঙ্কা থাকে। অর্থাৎ তার ক্ষত আরো গভীর হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বেশি করে তরল খাওয়াতে হবে: পোড়া রোগীকে স্যালাইন দেওয়া সম্ভব না হলে মুখে অন্তত স্যালাইন, ডাবের পানি বা তরল জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়াতে হবে। এ ছাড়া ক্যালরি ও প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন ডিম বা মুরগি খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

ইবাংলা / নাঈম/ ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১

আগুনে পুড়ে যাওয়াখুবই গুরুত্বপূর্ণচিকিৎসাবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
Comments (0)
Add Comment