বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে হলে নতুন করে আবেদন করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীতে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-ক্র্যাবের অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইনে আছে শর্তযুক্ত, শর্তমুক্ত।
খালেদা জিয়ার দরখাস্ত শর্তযুক্ত শর্তে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সরকারকে আইনের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। অনেকে বলছেন, ওই দরখাস্ত পুনর্বিবেচনা করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগের কথা। কিন্তু সেই দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। আমি বারবার বলে আসছি, একটা নিষ্পত্তি করা দরখাস্ত, আইন অনুসারে পুনর্বিবেচনা করার ক্ষমতা আমার নাই।’ দুর্নীতিতে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিশেষ শর্তে অস্থায়ীভাবে মুক্ত থাকা অবস্থায় বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার ‘আইনি সুযোগ নেই’ বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) যখন সাজা ভোগ করছিলেন তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দুটি বিশেষ শর্তে সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেন। ‘পুনরায় যদি একটি দরখাস্ত করা হয় সেটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আমি এখানেও বলছি, সংসদেও বলেছি।
শর্তযুক্ত শর্তে তিনি সাজা স্থগিতে যে মুক্তি পেয়েছেন সেটি যদি না মেনে পুনরায় জেলের যেতে চান সেটাও হতে পারে। কিন্তু এই অবস্থায় ফৌজদারি কার্যবিধির কোথাও নাই যে, তাকে আমরা আগের দরখাস্ত বিবেচনা করে বিদেশ যাবার সুবিধা করে দিতে পারি, সেটা নাই।’ ফৌজদারি কার্যবিধির ধারাতেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে- এমন দাবি করা হলেও আইনমন্ত্রী বলছেন, আইনে তেমন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা কারো বিদেশ যাওয়া বন্ধ করে না। কিন্তু আমি কখনো বলি নাই যে তাকে (খালেদা জিয়া) বিদেশে পাঠানো যাবে না। কিন্তু একবার নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনা সুযোগ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় নাই।’
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, যে মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন সেটি কিন্তু আওয়ামী লীগ করে নাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মামলা হয়েছে। ২০১২ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন সেই মামলার প্রতিবেদন দেয়। মামলাটির বিচার কার্যক্রম চলাকালীন তারা অন্তত দশবার হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে আবেদন করেছে মামলা স্থগিত করার জন্য। অনেক বিচারকের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন। সব কিছুর পর রায় হয়েছে। একটি মামলায় বিচারিক আদালতে সাজা পাঁচ বছর, হাইকোর্টে সেটি বেড়ে ১০ বছর হয়েছে। আরেকটা মামলায় পরে খালেদা জিয়ার সাত বছর সাজা হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার ‘সুচিকিৎসার’ সব বন্দোবস্ত করা হয়েছে । এভারকেয়ার হাসপাতাল তার (খালেদা জিয়া) প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ‘সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তারা সম্প্রতি সর্বশেষ টেকনোলজির একটি ক্যাপসুল আমদানি করেছেন। যেটা খেয়ে ফেললে ভেতরে গিয়ে ক্যামেরা কাজ করবে। ভেতরের সব অবস্থান ক্যামেরাবন্দি হবে। আমি তার সর্বশেষ অবস্থা জানি না, তবে যতটুকু জানি তার শারীরিক অবস্থা আগের চাইতে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখানে তিনি যতোটুকু সম্ভব সুচিকিৎসা পাচ্ছেন। সেখানে সরকারের কোনো হাত নেই। ’
ইবাংলা /টিআর /২৯ ডিসেম্বর