দেশে কঠোর বিধি-নিষেধের সপ্তম দিনে একদিনের রেকর্ড ২ শতাধিক মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতির পরের দিন বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়েও ছিলো উপচে পড়া ভীড়, মোড়ে মোড়ে দেখা গেছে তীব্র যানজট।
সড়কে অবাধে ছুটে চলা মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করলেও ব্যাংক, বীমা, শেয়ারবাজার, গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা চালু রয়েছে। ফলে কর্মজীবী মানুষগুলোকে প্রতিদিন অফিসে ছুটতে হচ্ছে। গণপরিবহন না থাকলেও ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, পণ্য ও জরুরি সেবার যানবাহনের উপস্থিতির কারণে এই যানজট দেখা যায়।
অনেকটা অবাধেই চলছে এসব ব্যক্তিগত গাড়ি। এর সঙ্গে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলেও যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। যেসব এলাকায় বিশেষ অভিযান চলছে না, সেখানে এসব ব্যক্তিগত গাড়ি, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চলাচলে কোনো ধরনের বাধা পেতে দেখা যায়নি।
দ্বিতীয় দফায় ঘোষিত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) লকডাউনের অষ্টম দিন সকালে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, গুলশান, বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা ঘুরে দেখে গেছে, গণপরিবহন না চললেও আগের দিনগুলোর তুলনায় সড়কে মানুষ, রিকশা, যানবহন অনেক বেড়েছে।
রাস্তায় মানুষের সংখ্যা লকডাউনের প্রথম সাতদিনের চেয়ে বেশি। মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ চলাচলও বেড়েছে। রামপুরা থেকে মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, কাকরাইল, পল্টন, মতিঝিল এলাকায়ও একই দৃশ্য দেখা গেছে।
বিভিন্ন চেকপোস্টে দেখা যায়, ছোট-বড় প্রতিটি গাড়িকেই চেকিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে যেতে দেওয়া হচ্ছে, অন্যথায় মামলা করা হচ্ছে। ফলে গাড়ির দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে ওই রাস্তায়। শুধু গণভবন চেকপোস্টেই নয়, রাজধানীর রাসেল স্কয়ার, কল্যাণপুর ও গাবতলী চেকপোস্টেও একই অবস্থা দেখা গেছে।
দেশে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করলে সরকার গত ১ জুলাই থেকে সাতদিনের কঠোর বিধি-নিষেধ জারি করে। দেওয়া হয় ২১টি নির্দেশনা। বিধিনিষেধের আটদিন পার হতে চললেও করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। কিন্তু সেই বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিলো বুধবার (৭ জুলাই) মধ্যরাতে।
এরমধ্যে বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। এই প্রেক্ষাপটে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। করোনা সংক্রমণ ও মৃত্রূর হার যেভাবে দিন দিন বাড়ছে এতে কঠোর বিধি-নিষেধ আরও বাড়তে পারেব বলে ধারণা করছে কভিড-১৯ কারিগরি কমিটি।
ই-বাংলা/ জা ই/ ৮ জুলাই, ২০২১