রাজনৈতিক সরকারের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে সচিবরা : তথ্যমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট :

রাজনৈতিক সরকারের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সচিববৃন্দকে। দায়িত্বাধীন জেলায় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করেই কাজ করছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ রাজধানীর মিন্টু রোডে তার সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয় সভার বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যদান শেষে সাংবাদিকদের এসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে একথা জানান।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং চট্টগ্রাম ৭ আসনের সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি।

আরও ছিলেন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো: কামরুল হাসান এনডিসি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মো: তানভীর , চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও অন্যান্য দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দের অনলাইন অংশগ্রহণে সভায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলাসহ চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন গণমুখী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

করোনাভাইরাস মোকাবিলার পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জেলার সমন্বয়ের দায়িত্ব সচিবদের দেয়া হয়েছে, এবিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি কার্যক্রম সমন্বয়ের দায়িত্ব সচিবরাই পালন করেন এবং সে হিসেবেই সচিবদের মূলত: বিভিন্ন জেলায় সরকারি কার্যক্রম সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

গণতান্ত্রিক দেশের সরকার একটি রাজনৈতিক সরকার, এই রাজনৈতিক সরকারের দেশ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে, করোনা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে, করোনা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে, ত্রাণ তৎপরতা চালানোর ক্ষেত্রে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অর্থাৎ কোভিড উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তগুলো সমন্বয় করার জন্যই সচিবদের এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’

সচিবরা যে সমস্ত জেলায় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন তারা সেখানে সেই জেলার মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধি যারা আছেন তাদের সাথে আলোচনা করেই সমন্বয়টা করছেন, সুতরাং এখানে কাউকে বড় বা খাটো করা হয়নি উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘সচিবরাই সরকারি কাজে সবসময় সমন্বয় করেন এখানেও সমন্বয় করার জন্যই তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’

উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যেমন চট্টগ্রামের সভা হচ্ছে, এই সভার সভাপতিত্ব করছি আমি। আর মোস্তফা কামাল সাহেব যিনি সচিব চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়েকের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি পুরো বিষয়টি সঞ্চালনা করছেন। আমরা সবাই আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি এবং সেই সিদ্ধান্তগুলোই বাস্তবায়ন করা হবে। সমন্বয়ের দায়িত্ব যে সচিবকে দেয়া হয়েছে তিনি সেই সমন্বয়টা করবেন অন্যান্য জেলার ক্ষেত্রেও তাই।’

মেগা প্রকল্পগুলোর অর্থ কমিয়ে করোনার টিকা সংগ্রহের কাজে লাগানোর জন্য বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেনের প্রস্তাবের বিষয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি’র মত জোড়াতালি দিয়ে আওয়ামী লীগ দেশ চালায় না। টিকা ক্রয়ের জন্য কোনো প্রকল্পের বরাদ্দ কমানোর প্রয়োজন নেই।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নিজেরা দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ ছিলেন, সেজন্য তারা এদিক থেকে ‘কাট’ করে ওদিক এভাবে জোড়াতালি দিয়ে দেশ চালিয়েছে। তাদের সেই জোড়াতালি দিয়ে আমাদের দেশ চালাতে হবে না। প্রধানমন্ত্রী সফলভাবেই দেশ পরিচালনা করছেন, কোনো জায়গা থেকে কমিয়ে কোনো কিছু করতে হবে না। করোনা মোকাবিলার জন্য বিশেষত: করোনার টিকা কেনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।’

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি নজর দেয়া নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের পরামর্শের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার প্রথমদফা লকডাউনের সময় ৭ কোটির বেশি মানুষকে সহায়তা দিয়েছে। ইতোমধ্যে আরো কয়েক কোটি মানুষকে সহায়তা দেয়া হয়েছে এবং এই সহায়তা চলমান রয়েছে।

একইসাথে আমাদের দলের পক্ষ থেকেও পর্যাপ্ত পরিমাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা দলের সকল নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকতে বলেছেন এবং সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।’

ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব তো জনগণের পাশে দাঁড়ান নাই, শুধু টেলিভিশনেই বক্তব্য দেন আর মাঝেমধ্যে অনলাইনে উঁকি দিয়ে বক্তব্য দেন, সেকারণেই তারা একথাগুলো বলছেন। দেশে কি কোনো হাহাকার আছে! আজকে ১৬ মাস করোনা বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে, একজন মানুষ তো না খেয়ে মৃত্যুবরণ করে নাই। এটিই হচ্ছে সরকারের সফলতা। আমরা ইনশাআল্লাহ এই পরিস্থিতিও মোকাবিলা করতে পারবো। আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলবো এ ধরণের পরামর্শ না দিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।’

পরে টিভি নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড এবং অভিনয় শিল্পী সংঘের নেতৃবৃন্দ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে তার বাসভবনে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০২১ এর আওতায় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেলিভিশন শিল্পীদের অন্তর্ভুক্ত করায় মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানান তারা।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মকবুল হোসেন, ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনস-এফটিপিও চেয়ারম্যান নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, ডিরেক্টরস গিল্ড সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সাগর, অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম ও প্রেজেন্টারস প্ল্যাটফর্র্মের সাধারণ সম্পাদক আনজাম মাসুদ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

ই-বাংলা/ রাজ ই/ ৯ জুলাই, ২০২১

বাস্তবায়নেসচিবরাসিদ্ধান্তসমূহ
Comments (0)
Add Comment