ফেসবুকে মৃত টুইটারে জীবিত তসলিমা নাসরিন

ইবাংলা ডেস্ক

লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে মৃত দেখাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে এই লেখিকার ভেরিফাইড পেজে ‘রিমেম্বারিং তসলিমা নাসরিন’ লেখাটি দেখা যায়।

এর আগে জনপ্রিয় এই যোগাযোগ মাধ্যমে মৃত্যু সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। এতেই বেকায়দায় পড়েন তসলিমা। সাধারণত কেউ মারা গেলে তার বন্ধু বা স্বজনদের অনুরোধে ‘রিমেম্বারিং’ অপশন চালু করে ফেসবুক। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তসলিমা নাসরিনের আইডি ‘রিমেম্বারিং’ করে দিয়ে লিখেছে, ‘তসলিমার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমরা আশা করছি, তসলিমা নাসরিনের বন্ধু-স্বজনরা এখানে তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদন করতে পারবেন।’

তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। জনপ্রিয় মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটারে তসলিমা এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখেন, ‘ফেসবুক আমাকে মেরে ফেলেছে। আমি জীবিত, এমনকি অসুস্থ, শয্যাশায়ী বা হাসপাতালেও ভর্তি নই। তবে ফেসবুক আমার অ্যাকাউন্টকে ‘মেমোরিয়ালাইজড’ করে রেখেছে।

এদিকে গত ১৮ ঘণ্টা আগে ফেসবুকে মৃত্যু সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, ওই স্ট্যাটাস দেয়ার কারণেই তাকে মৃত ভেবে রিমেম্বারিং অপশন চালু করেছে ফেসবুক।

ওই স্ট্যাটাসে তসলিমা লেখেন, ‘আমি চাই আমার মৃত্যুর খবর প্রচার হোক চারদিকে। প্রচার হোক- আমি আমার মরণোত্তর দেহ দান করেছি হাসপাতালে, বিজ্ঞান ও গবেষণার কাজে। কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনে কারও জীবন বাঁচুক। কারও চোখ আলো পাক। প্রচার হোক, কিছু মানুষও যেন প্রেরণা পায় মরণোত্তর দেহ দানে।’

বিতর্কিত এই লেখিকা বলেন, ‘অনেকে কবর হোক চান, পুড়ে যাক চান, কেউ কেউ চান তাদের শরীর পোড়া ছাই প্রিয় কোনো জায়গায় যেন ছড়িয়ে দেয়া হয়। কেউ কেউ আশা করেন তাদের দেহ মমি করে রাখা হোক। কেউ আবার বরফে ডুবিয়ে রাখতে চান, যদি ভবিষ্যতে প্রাণ দেয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার হয়!

অসুখ-বিসুখে আমি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করি এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত করবো। কোনো প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে আমার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই, ঠিক যেমন বিশ্বাস নেই কোনো কুসংস্কারে। জীবনের একটি মুহূর্তেরও মূল্য অনেক। তাই কোনো মুহূর্তই হেলায় হারাতে চাই না। মরার পর আমরা কিন্তু কোথাও যাই না। পরকাল বলে কিছু নেই। পুনর্জন্ম বলে কিছু নেই। মৃত্যুতেই জীবনের সমাপ্তি। সারা জীবনই আমর জীবনকে অর্থপূর্ণ করতে চেয়েছি। মৃত্যুটাও চাই অর্থপূর্ণ হোক।’

ইবাংলা /এইচ/১৮ জানুয়ারি, ২০২২

তসলিমা নাসরিন
Comments (0)
Add Comment