ভ্রাম্যমাণ কৃষি হাসপাতালের সেবা নিচ্ছে মেহেরপুরবাসি

জেলা প্রতিনিধি, মেহেরপুরে

কৃষকদের কাছে পরিবেশবান্ধব কৃষিপ্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামে ভ্রাম্যমাণ কৃষি হাসপাতাল চালু করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। ভ্রাম্যমাণ কৃষি হাসপাতালের মাধ্যমে গ্রামের কিষান-কিষানিদের পরামর্শ হিসেবে কৃষির উৎপাদন, রোগবালাই রোধে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। আর ভ্রাম্যমাণ এ হাসপাতালে পরামর্শ নিতে কৃষকরাও আসছেন আগ্রহ নিয়ে।

দেশে প্রথম ভ্রাম্যমাণ কৃষি হাসপাতাল চালু হয়েছে মেহেরপুরে এবং এটা ব্যতিক্রম বলছে জেলা কৃষি বিভাগ । কৃষি হাসপাতালের মাধ্যমে জেলার কৃষকদের কৃষি উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা দূর হওয়ার পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনে বিরাট অবদান রাখবে।

গাংনী উপজেলার অলিনগর গ্রামে দেখা মেলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বকুল হোসেনের, যিনি গ্রামের কিষান-কিষানিদের সবজির রোগ প্রতিরোধে করণীয় ও রোগাক্রান্ত সবজির রোগ প্রতিরোধে পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রতিদিনই কিষানিরা বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষের পরামর্শ ও বালাইনাশক নিচ্ছেন। মাঠের চাষিরা বিভিন্ন ফসল নিয়ে পরামর্শ নিতে আসছেন ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালে।

চিকিৎসা সহায়তা নিতে আসা গুহবধূ ও কিষানিরা বলেন, ভ্রাম্যমাণ কৃষি হাসপাতালের মাধ্যমে ফল ও সবজির পোকামাকড় দমনের জন্য বিষটোপ তৈরি, অন্যান্য ক্ষতিকর পোকা দমনের জন্য জৈব বালাইনাশক তৈরির কৌশল শিখেছি। পোকা দমনপদ্ধতির মাধ্যমে রোগমুক্ত সবজি উৎপাদন করতে পারছি। অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে না। তা ছাড়া রাসায়নিক সারের ব্যবহার বন্ধ করে জৈব সারে সবজি উৎপাদন করার পরামর্শ নিচ্ছি।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক স্বপন কুমার খাঁ বলেন, মেহেরপুরের মাটিতে সব ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। কৃষি নিয়ে কৃষকদের সব সময়ই পরামর্শ দেওয়া হয় সব সময়। মেহেরপুরের কৃষিতে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। পর্যায়ক্রমে জেলার সব ব্লকেই ভ্রাম্যমাণ কৃষি হাসপাতালের মাধ্যমে পরামর্শ দেওয়া হবে।

জেলা কৃষি অফিস জানায়, গাংনী উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে এলাচি ফল চাষ শুরু হয়েছে। আগামী দুই-চার বছরের মধ্যে মেহেরপুরের মাটিতে এলাচি উৎপাদিত হবে। তেরাইল ব্লকের বসতভিটায় ৫৫ হেক্টর অব্যবহৃত জায়গায় পুষ্টিকর সবজি বাগান করা হয়েছে। হরেক রকমের ফল ও শাকসবজি উৎপাদিত হচ্ছে। চলতি মৌসুমে বাড়ির আঙিনার ৮০০ টন লাউ, ১০০ টন করলা, ২০০ টন শসা, ৫০০ টন টমেটো, ২৪৫ টন মুলা, ১৮০ টন পালং ৬০ টন বরবটি, ৬০ টন লালশাক, ৩৫০ টন পেঁপে, ৪০ টন গাজর উৎপাদিত হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ কৃষি হাসপাতালের চিকিৎসক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বকুল হোসেন বলেন, জৈব কৃষির বিস্তার অতিদ্রুত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এসব পরামর্শ প্রদান করছি। এখানে হাতে-কলমে ব্যবহারবিধি শেখানো হয়। ফলে গ্রামাঞ্চলের মানুষ কম খরচে বিষমুক্ত নতুন নতুন জাতের ফল উৎপাদন করছেন। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে কালেকশন পয়েন্টের মাধ্যমে বাজারজাত করে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

ইবাংলা /টিপি / ১৯ জানুয়ারি

ভ্রাম্যমাণ কৃষি হাসপাতাল
Comments (0)
Add Comment