বরগুনার তালতলীতে শ্বশুর বাড়ির ঘর থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় ইব্রাহিম খলিফা (২১) নামের এ যুবকের ঝুলান্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারী) ভোররাতে উপজেলার মালিপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ এ লাশটি ময়না তদন্তে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের ছোট ভাইজোড়া এলাকার মো. দেলোয়ার হাওলাদারের মেয়ে লামিয়া (২০) এর সাথে গত দু’বছর আগে বিয়ে হয় নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মৌরভী গ্রামের বাদশা খলিফার ছেলে ইব্রাহিমের (২১)। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই তাদের সংসারে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এরই মধ্যে গত বছরের অক্টোবর মাসে লামিয়ার গর্ভে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। এ সময় লামিয়া তার বাবার বাড়ি চলে আসে। সন্তান জন্মের পরে স্ত্রীকে আনতে শশুর বাড়ি গিয়ে মারধরের শিকার হয়ে ফেরৎ আসেন ইব্রাহিম। পরে সে রাজ মিস্ত্রীর কাজ করতে নোয়াখালীতে চলে যায়।
নোয়াখালী থেকে ইব্রাহিম তার স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ হলে স্ত্রী লামিয়া জানান, তালতলী সদরে বাসা রেখে যদি বসবাস করে তাহলে সে স্বামীর সাথে থাকবে, অন্যথায় শশুর বাড়ী থাকবে না। এ ঘটনার ৮-১০ দিন আগে এব্রাহিম নোয়াখালী থেকে এসে তালতলী সদরে বাসা ভাড়া রেখে সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সোমবার স্ত্রী লামিয়াকে আনতে শশুর বাড়ি যায়। সেখানে শশুর বাড়ির লোকজনের সাথে ইব্রাহিমের কথার কাটাকাটি হয়। পরে ভোররাতের দিকে আত্মহত্যার খবর পেয়ে পুলিশ গলায় ওড়না পেছানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
ইব্রাহিমের শশুর মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, সোমবার সারাদিন আমার বাড়ি কাজ করেছে ইব্রাহিম। সন্ধ্যার দিকে আমি জয়ালভাঙ্গা তাপ বিদ্যুত প্রকল্পে রাতের ডিউটি শেষে বাড়িতে এসে এব্রাহিম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এ ঘটনা দেখি। এর বেশি কিছু জানি না।
ইব্রাহিমের বাবা বাদশা খলিফা বলেন, আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার ৪ মাস আগে আমার ছেলে তার স্ত্রীকে আনতে গেলে ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়েছে তার শশুর। পরে অভিমান করে আমার ছেলে নোয়াখালী চলে যায়। আমার ছেলের লাশ যখন উদ্ধার করেছে তখন তার পায়ে জুতো এবং মাটিতে দাঁড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে একাধিক স্বাক্ষ্য রয়েছে। তার চোখে ও কপালে আঘাতের চিহ রয়েছে। আমার মনে হয় এটা পরিকল্পিত হত্যা। আমি এ হত্যার বিচার চাই । পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পেলে হত্যা মামলা দায়ের করব।
এ বিষয়ে তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হযেছে।
ইবাংলা /এইচ/ ২৫ জানুয়ারি, ২০২২