নিজেদের রাজনৈতিক অভিপ্রায় বাস্তবায়নের জন্যই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলোতে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান এবং জামায়াতে ইসলামী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি এবং জামায়াত অতীতেও এই মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে কাজে লাগিয়েছে। সাধারণত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় কোনো ব্যক্তির দ্বারা, কোনো প্রতিষ্ঠান দ্বারা নয়।
তারা বলছেন, র্যাবের কোনো কর্মকর্তা যদি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন, তার দায়-দায়িত্ব র্যাব হিসেবে পুরো প্রতিষ্ঠানের উপর বর্তায় না। কিংবা একজন বিশেষ ব্যক্তির অপরাধের কারণে পুরো একটি বাহিনীর ওপর কলঙ্ক লেপন কখনোই ন্যায়বিচার নয়। আর এই কাজটি করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকেও এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও একই আবেদন দিয়েছে। তারা বলছে যে, জাতিসংঘকে যেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য চাপ প্রয়োগ করে যাতে র্যাবের কোনো সদস্য শান্তিরক্ষা মিশনে না থাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় থেকেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান নেয়। সেই সময় যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তরা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে ব্যবহার করে তাদের পক্ষে লবিং করার জন্য। সেই ধারায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মীর কাসেমের মতো স্বীকৃত ধনাঢ্য যুদ্ধাপরাধীরা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে। এটি পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এই অর্থ দেওয়ার কারণেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সেই সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিল।
তবে শুধু হিউম্যান রাইটস ওয়াচই নয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকেও তারেক এবং জামায়াতের ধনাঢ্যরা অর্থায়ন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সমস্ত অর্থায়নের কারণেই তারা বাংলাদেশের ব্যাপারে নেতিবাচক বিভিন্ন প্রতিবেদন রিপোর্ট প্রকাশ করছে।
একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে সমস্ত প্রতিবেদন এবং রিপোর্টগুলো সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোই তৈরি করে দিয়েছে। এই রিপোর্টগুলো তৈরি করা এবং প্রকাশ করা নিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করছে। তবে তাদের এ ধরনের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বিভিন্ন দেশে এই প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত বছর ভারত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রমকে বন্ধ ঘোষণা করেছিল এবং দেশটির সরকার তদন্ত করে পেয়েছিল যে, কিছু কিছু ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের দ্বারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে।
একই ধরনের অভিযোগ করেছে রাশিয়া। চীন তো অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে কোনো স্বীকৃতিই দেয় না। এ রকম যখন অবস্থা তখন সুস্পষ্ট যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়ে যায়নি যে, একটি বাহিনীর সম্বন্ধে ঢালাওভাবে নেতিবাচক মন্তব্য করতে হবে। বর্তমানে যা হচ্ছে, এর পেছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
ইবাংলা /নাঈম/ ৩০ জানুয়ারি, ২০২২