‘১৫ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে এসেও ভর্তি হতে পারেননি নিপুন’ এমন নিউজ প্রকাশের পর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের বিশেষ নির্দেশে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন নিপুন বিশ্বাস। যথা সময়ে উপস্থিত হতে না পারলেও মানবিক দিক ও নিপুনের পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে উপাচার্যের উপর অর্পিত ক্ষমতাবলে তাকে ভর্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির জরুরি সভায় নিপুন বিশ্বাসের ভর্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
ভর্তির সুযোগ পাওয়ার সংবাদ শুনে নিপুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে ফোন দেওয়া হয়েছিল। আগামীকাল ভর্তি হতে পারবো শুনে অনেক ভালো লাগছে। আমাকে ভর্তির সুযোগ দেওয়ায় যবিপ্রবি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এছাড়া আমার পাশে থাকার জন্য যবিপ্রবিয়ানসহ সংশ্লিষ্ট সকল সাংবাদিক ভাইদের প্রতি আমার এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।’
ডিনস কমিটির সভায় জানানো হয়, ‘গত ৩০.০১.২০২২ খ্রি. তারিখে ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তির মেধাতালিকার একজন শিক্ষার্থী নিপুন বিশ্বাস, মেধাক্রম ১৭, ক্রমিক নম্বর ৭০২৬৯ পরিবহন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত সময়ে (সকাল ১০:০০-১১:০০ টার মধ্যে) উপস্থিত হতে পারেননি। এমতাবস্থায়, অনুষদীয় ভর্তি কমিটি উক্ত শিক্ষার্থীর ক্রমের পরবর্তী ক্রমের (মেধাক্রম ১৯, রোল নম্বর ৭০০৩০) উপস্থিত শিক্ষার্থী বায়েজিদ মল্লিককে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে উক্ত শিক্ষার্থী (নিপুন বিশ্বাস) বেলা ০১:৩০ মিনিটে উপস্থিত হন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টির মানবিক দিক বিবেচনায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে একটি আসন বর্ধিত করে উক্ত শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানোর জন্য ডিনস্ কমিটিকে অনুরোধ করেন। মাননীয় উপাচার্যের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এ কমিটি উক্ত শিক্ষার্থীকে একটি আসন বাড়িয়ে ভর্তি করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির পরবর্তী সভায় অবহিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।’
যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি কমিটি নিয়ম মেনেই হয়তো ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু আরেকটু অপেক্ষা করলে, এ ধরনের অবস্থা সৃষ্টি হতো না। নিপুন বিশ্বাস সমাজের একটি অনগ্রসর পরিবারের সদস্য, আমি এটা জানতে পেরে ডিনস কমিটির জরুরি সভার নির্দেশ দিই। আশার কথা হচ্ছে, যবিপ্রবির স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি কার্যক্রম শেষ হলেও আগামীকালই সে ভর্তি হতে পারবে। যবিপ্রবি প্রশাসন সব সময় শিক্ষার্থীদের প্রতি সহনাভূতিশীল। যবিপ্রবির শিক্ষার্থীসহ যারা এ ঘটনা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচরে আনতে সহায়তা করেছেন, তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ডিনস কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে ডিনস কমিটির জরুরি সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব, জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল আমিন, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. তানভীর ইসলাম, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সুমন চন্দ্র মোহন্ত, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ইবাংলা /এইচ /২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২