কন কনে শীতে উত্তর জনপদ বিপর্যস্ত

মোঃ জামাদুল ইসলাম আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি :

বগুড়ার আদমদীঘিতে বেশ কয়েক দিন ধরে তীব্র ও কন কনে শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে। আক্রান্ত হচ্ছে শিশু বৃদ্ধসহ সব শ্রেনী পেশার মানুষ।

এতে বিপাকে পড়েছেন খেটেখাওয়া দিনমজুর মানুষেরা। কেউ কেউ শীতের কারণে কাজও পাচ্ছেন না। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল হাওয়া আর কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলার জনজীবন। শীত থেকে বাঁচতে নিজেকে গৃহবন্দি করে রাখছেন অনেকেই।

প্রায় বেশ কয়েক দিন যাবত উপজেলাতে এরূপ অবস্থা বিরাজ করছে। কুয়াশার সাদা চাদরে ঢাকা থাকছে চারিদিক। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশাচ্ছন্ন আদমদীঘির পুরো জনপদ। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চালাতে হচ্ছে যানবাহন।

শীতের কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে নিম্নআয়ের খেটেখাওয়া মানুষসহ ছিন্নমূল মানুষের। রিকশা চালক কলিম হোসেন, আফজাল হোসেন জানান, ঠান্ডার কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের না হওয়ায় যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। এ কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে খুবই বিপাকে আছি। চা বিক্রেতা ছিদ্দিক হোসেন ও জয়নাল জানান, শীতের কারণে সন্ধ্যায় দোকানে আগের মতো ক্রেতা আসে না।

প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে ক্ষেতে ধানের চারা রোপণ করতে কৃষকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। দিনমজুর মিজানুর রহমান ও আব্দুল কুদ্দস বলেন, কাজ করলে পেট চলে। কাজ না করলে পেট চলে না, সে কারণে বাধ্য হয়ে কাজের সন্ধানে বের হতে হয়। তার পরও এখন কাজকর্ম তেমন পাওয়া যায় না। কোনো দিন জোটে, কোনো দিন জোটেই না।

গত কয়েক দিনে যে শীত পড়ছে তাতে কাজে যোগদান করতে পারছি না। ফেরিওয়ালা আজাদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করি। কয়েক দিন ধরে প্রচন্ড শীত ও কুয়াশার কারণে কাঁধে ভার নিয়ে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে পণ্য বিক্রি করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। নকনে শীতের কারণে বের হওয়াই খুব কঠিন। বের হলেও বেচাবিক্রি নেই।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. কামরুজ্জামান বলেন, শৈত্যপ্রবাহ দীর্ঘস্থায়ী হলে বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আজিজুল হাকিম বলেন, আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেসে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে।

জ্বর-সর্দি-কাশি, ও অ্যাজমা রোগী আগের চেয়ে অনেক বেশি আসছেন। অতিরিক্ত ঠান্ডা জনিত কারণে প্রায় সব বয়েসের লোকেরা জ্বর,সদি,কাশি সহ বিভিন্ন ঠান্ডা জনিত রোগে হাসপাতালে আসছেন। তবে শিশুদের উষ্ণ স্থানে রাখা ও বয়স্কদের শীতজনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ইবাংলা/ ই/ ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

Comments (0)
Add Comment