নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। শ্বশুরের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন রিয়াজ।
আবু মহসিন খানের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ধানমন্ডির বাসা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সেখানে যান রিয়াজ। মর্গ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হন চিত্রনায়ক রিয়াজ।
এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে রিয়াজ বলেন, ‘আপনারা আমার বাবার (শ্বশুর) জন্য দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ তাকে মাফ করে দেন। বেহেশত নসিব করেন। এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে পারছি না।’
মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আত্মহত্যার আগে ফেসবুক লাইভে এসে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন রিয়াজের শ্বশুর মহসিন। এ সময় তিনি বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতার কথাও জানান লাইভে। মহসিন বলেন, আমি ক্যানসার আক্রান্ত।
আমার ব্যবসায় এখন বন্ধ। আমার এক ছেলে থাকে অস্ট্রেলিয়ায়। আমি বাসায় একাই থাকি। আমার ভয় করে যে, আমি বাসায় মরে পড়ে থাকলে, লাশ পচে গেলেও কেউ হয়তো খবর পাবে না।’
লাইভে তিনি আরও বলেন, ‘পিতামাতা যা উপার্জন করে তার সিংহভাগ সন্তানদের পেছনে খরচ করে। প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামিলিকে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ফ্যামিলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। আমি বিভিন্ন লোকজনের কাছে পাঁচ কোটি টাকা পাই।
কিন্ত অনেক চেষ্টা করেও সে টাকা উদ্ধার করতে পারিনি। যাদের ভালোর জন্য আমি করেছি, তাদের সবার কাছেই আমি প্রতারিত হয়েছি। মানুষ অন্যের টাকা কেন ছলচাতুরি করে নিয়ে যায়? আমি তো কারও টাকা নিইনি। পারলে মানুষের উপকার করেছি, না পারলে আশপাশে যাইনি। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না।’
এরপর নিজের পিস্তলের লাইসেন্স দেখিয়ে মহসিন বলেন, ‘আমি যেটা দিয়ে আত্মহত্যা করছি সেটি ইলিগ্যাল কিছু না। এটির লাইসেন্স আছে। সেটি নবায়নও করা হয়েছে। আমি চলে যাব। আত্মীয়স্বজন যারা আছো, যেহেতু বাবাও আমাকে জায়গাটা দেয়নি, আমি যে কবরস্থানটা করেছি সেখানে আমাকে দাফন করো না।
মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে একটি কবরস্থান হয়েছে, সেখানে তোমরা আমাকে দাফন করে দিও। প্রত্যেকটা লোক আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমার বাবা, মা, ভাইয়েরা, প্রত্যেকটা লোক, এভরিওয়ান।’
লাইভে কথা বলার সময় তার সামনে টেবিল ছিল। ওই টেবিলে কাফনের কাপড় ছিল। তার ওপর একটি চিরকুট ছিল, তাতে লেখা আছে- এখানে কাফনের কাপড় রাখা আছে; যা আমি ওমরা হজে ব্যবহার করেছিলাম।
যারা দেখছেন, তাদের সঙ্গে এটাই শেষ দেখা। সবাই ভালো থাকবেন। এভাবে ১৫ মিনিট কথা বলে ১৬ মিনিটের সময় কালেমা পড়তে পড়তে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন মহসিন।
ইবাংলা/ ই/ ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২