বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়নের রুমা জোনের অন্তর্গত বথিপাড়া এলাকায় বুধবার রাতে সেনা বাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে সেনাবাহিনীর রুমা জোনের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন, আহত হয়েছে সৈনিক মো. ফিরোজ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আহত সৈনিক ফিরোজকে উদ্ধার করে চট্টগ্রামে সম্মিলিতি সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এ প্রেরণ করা হয়েছে। তবে বান্দরবানের রুমা জোনের আওতাধীন হলেও সন্ত্রাসীদের সাথে সেনাবাহিনীর বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাস্থল বথিপাড়া রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বটতলী এলাকা।
এদিকে সেনাবাহিনী আর্ত্মক্ষাথে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি করলে সন্ত্রাসী বাহিনীর তিন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। সেনাবাহিনী নিহত সন্ত্রাসীদের মরদেহ উদ্ধার করেছেন। এসময় সন্ত্রাসী বাহিনীর ব্যবহৃত একটি এসএমজি, বিপুল অস্ত্র ও গোলা জব্দ করে সেনাবাহিনীর টহল দল।
জব্দকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একটি সাবমেশিন গান (এসএমজি), ২৭৫ রাউন্ড তাজা গুলি, তিনটি অ্যামোনেশিয়াম ম্যাগজিন, তিনটি গাদা বন্দুক ও ৩ রাউন্ড গুলি, ৫ সেট মোবাইল ফোন, ২টি বান্ডুলিয়ার, চার জোড়ার জলপাই রং এর পোষাক, নগদ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা। সেনা সূত্র জানায়, বর্তমানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উল্লেখিত এলাকায় টহল তৎপরতা জোরদার করেছে।
বান্দরবান রিজিয়নের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানায়। প্রেস ব্রিফিং এ জানানো হয়, বান্দরবান রিজিয়নের প্ক্ষ থেকে জানানো হয়, বুধবার রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে সেনাবাহিনীর রুম ২৮ ইনফেন্ট্রি রেজিমেন্টের (বীর) একটি টহল দল বথি পাড়া এলাকার দিকে যায়।
সেনা সূত্র জানায়, সেনাবাহিনীর সোর্সের মাধ্যমে খবর পায় যে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠক পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএএস) মূল দল সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী দলের সদস্যরা রুমা জোনের অন্তর্গত পাখই পাড়া এলাকায় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছে। সেনা সূত্র জানায়, এ খবরের ভিত্তিকে রুমা জোনের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সেনা টহল দল পাখইপাড়ার দিকে রওয়ানা দেয়।
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে পাখইপাড়া যাওয়ার পথে বথিপাড়া এলাকায় গেলে, পাশের জঙ্গলের একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা সেনা টহল দলকে লক্ষ্য করে অতর্কিতে গুলি করতে থাকে। এসময় আত্মরক্ষার্থে সেনা টহল দলটিও সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি চালায়।
সেনাবাহিনীর গুলিতে সন্ত্রাসী দলের তিন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। সেনাসদস্যদের গুলিতে দিশেহারা হয়ে সন্ত্রাসী দলের অন্য ৭/৮ জন সদস্য পালিয়ে যাওয়ার সময়ও সেনা সদস্যরা সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।
সেনা সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় সেনা বাহিনীর টহল দলকে লক্ষ্য করে এতোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে। এসময় সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গুলিতে সেনাবাহিনীর টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।
টহল দলের সৈনিক মো. ফিরোগ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে সৈনিক ফিরোজকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম সম্মিলিতি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করে।
এদিকে সেনাবাহিনী সূত্র জানায়, সেনাবাহিনীর রুমা জোনের আওতাধীন বথিপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনীর চারটি দল সন্ত্রাসী তৎপরতা চালায়। নিরাপত্তা বাহিনী যে কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা নির্মূলে সবসময় কাজ অব্যাহত রেখেছে।
রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কাসেম চৌধুরী বলেছেন ঘটনার সতত্যা নিশ্চিত করেছেন এবং ঘটনার পরপরই ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান।
ইবাংলা/ ই/ ৩ ফেব্রুয়ারি