আগামী জুনে পদ্মা বহুমুখী সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের। তবে এর আগে, পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ে যৌথভাবে কোরিয়া ও চীনের দুই প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।ঐ প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে- কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি) ও চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১২ আগস্ট অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে জি-টু-জি ভিত্তিতে কেইসি-কে সার্ভিস প্রোভাইডার/অপারেটর নিয়োগের জন্য সেতু বিভাগের প্রস্তাবটি নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়।
কেইসি’র প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট টেকনিক্যাল কমিটির মূল্যায়নের পর জি-টু-জি পদ্ধতিতে ক্রয়তব্য পণ্য/সেবার মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটিতে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধার জন্য পরবর্তীতে কেইসি ও পদ্মাসেতুর নির্মাণ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমবিইসি যৌথ উদ্যোগ বা জয়েন্ট ভেঞ্চার (জেভি) চুক্তি স্বাক্ষর করে।
কেইসি-এমবিইসি জেভি‘র কারিগরি প্রস্তাব মূল্যায়ন করে অপারেটর/সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে তাদের অনুমোদন এবং আর্থিক প্রস্তাব দখিলের জন্য কেইসি-এমবিইসি জেভিকে অনুরোধ জানানোর সুপারিশ করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কেইসি লিড হিসেবে কাজ করবে। সেতু রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে প্রতিষ্ঠান দুটিকে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কেইসি সার্ভিস এরিয়া এবং অ্যাপ্রোচ রোড, টোল কালেকশন এবং অপারেশন, ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম (আইটিএস) স্থাপন এবং ট্রাফিক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে।
এমবিইসি পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজে নিযুক্ত থেকে সেতু এলাকার আবহাওয়া, নদীর অবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণাসহ ভূমিকম্প নিরোধক বিয়ারিং স্থাপন, ট্রাসের সংযোগস্থল ইত্যাদি কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, যা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে সহায়ক হবে। এমবিইসির ৩০০টি সেতু এবং ৭০০ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভিজ্ঞতা আছে।
অপরদিকে পদ্মা সেতুর নির্মাণ তদারকি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেইসির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও টোল আদায়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস) ও ইলেক্ট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম (ইটিসিএস) ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আছে।
এদিকে কেইসি এবং এমবিইসির যৌথ উদ্যোগের ফলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সেতুর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায় নিশ্চিত করা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেইসি-এমবিইসি জেভি আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করেছে। কমিটি এরই মধ্যে তা মূল্যায়ন করছে। খুব শিগগির ঐ প্রস্তাবের নেগোশিয়েশন শেষ করে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
ইবাংলা/ নাঈম/ ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২