যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করে গর্ভের দুই মাসের সন্তানকে নষ্ট করার অভিযোগে পুলিশ সদস্য মো. তাজুল ইসলাম রুবেলকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
রুবেল পিরোজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয় কর্মরত রয়েছেন। তিনি দীর্ঘ দিন পলাতক থাকার পর মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। তবে বিচারক মো. হাফিজুর রহমান জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেন এবং তাঁকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মো. তাজুল ইসলাম রুবেল বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামের মোস্তফা গাজীর ছেলে ২০২১ সালের ৫ আগস্ট ছুটিতে বাড়ী এসে চাকরীর প্রোমোশনের জন্য স্ত্রী সুমি আকতারের নিকট ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করেন। স্ত্রী যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে রুবেল উত্তেজিত হয়ে তার গর্ভবতি স্ত্রীর তলপেটে লাথি মারে। স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গর্ভের দুই মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। রুবেলের শাশুরী হেলেনা বেগম বরগুনা থানায় ১০ আগস্ট মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ১ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে তদন্ত শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর ওই ট্রাইব্যুনাল তাজুল ইসলাম রুবেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়। রুবেলের স্ত্রী সুমি আক্তার পিরোজপুর পুলিশ সুপার বরাবরে ৭ ফেব্রুয়ারি মামলার বর্ণনা দিয়ে রুবেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বাদী হেলেনা বেগম বলেন, আমি মামলা করার পর আমার জামাতা রুবেল আমাকে ও আমার মেয়েকে বিভিন্ন প্রকার হয়রানী করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বরিশাল ডিআইজি অফিসে নেয়। সেখানে আমরা রুবেলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার পরে পুলিশ রুবেলকে বরখাস্ত করেননি। আমরা রুবেলের বিচার চাই। রুবেল কোর্ট বারান্দায় পুলিশের সামনে উচ্চ স্বরে চিৎকার দিয়ে বাদীর আইনজীবীকে গালমন্দ করে বলে জামিনে মুক্তি পেয়ে পিরোজপুর থানায় মামলায় জড়িত করে দেব। সুমিকে তালাক দেব। কোর্ট পুলিশ রুবেলকে শান্ত করে।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইদুর রহমান নয়াদিগন্তকে বলেন, তাজুল ইসলাম রুবেল জেল হাজতে যাওয়ার বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম, আদালতের আদেশ পাওয়ার পরে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইবাংলা/এইচ/৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২