রাজধানীতে পৃথক স্থান থেকে স্কুলছাত্রীসহ তিন নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মুগদার স্কুলছাত্রী শান্তা আক্তার (১৫), খিলগাঁওয়ের রওশন আরা বেগম (৬০) ও ওয়ারীর অজ্ঞাতনামা এক নারী (৪০)।পুলিশ বলছে, বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে পৃথক স্থান থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
মুগদা থানার এসআই মো. আবুল আনছার বলেন, খবর পেয়ে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় মুগদা মেডিকেল থেকে ঐ স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, শান্তা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃত স্কুলছাত্রী শান্তা কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ব্রাহ্মণচর গ্রামের কামাল ইসলামের মেয়ে। সে মা ও বড় বোনের সঙ্গে মুগদা মানিকনগর ৬৯/১ নম্বর বাসায় থাকতো।
শান্তার ভগ্নিপতি মাসুম হোসেন বলেন, মানিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো শান্তা। বুধবার সন্ধ্যায় তার মা এবং বড় বোন বাসার বাইরে ছিলেন। এ সময় বাসায় একাই ছিল সে। সন্ধ্যার পর তার মা বাসায় ফিরে রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেও শান্তার কোনো সাড়াশব্দ পাননি তিনি। পরে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখেন, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে শান্তা। দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক শান্তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে কী কারণে সে আত্মহত্যা করেছে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি স্বজনরা।
এদিকে, বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে খিলগাঁও কবরস্থানের ভেতরে দক্ষিণ-পূর্ব কোণের একটি গাছে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় রওশন আরা বেগম নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রওশনময়মনসিংহ সদর উপজেলার চররাঘবপুর গ্রামের সাম্মত আলীর স্ত্রী।
খিলগাঁও থানার এসআই সনিয়া পারভীন বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খিলগাঁও কবরস্থানের ভেতরে দক্ষিণ-পূর্ব কোণের একটি গাছে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস নেন রওশন আরা বেগম। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে সিআইডি ক্রাইম সিন বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।
রওশন আরার ছেলে মো. সজিব জানান, তারা চার ভাই, তিন বোন। দীর্ঘ ৮-১০ বছর ধরে তার মায়ের মানসিক সমস্যা ছিল। বিভিন্ন সময়ে তিনি বাসার বাইরে চলে যেতেন। অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতেন। বুধবার সন্ধ্যার দিকে খিলগাঁও তালতলা রিয়াজবাগের মেয়ের বাসা থেকে বের হন রওশন আরা। পরে খিলগাঁও কবরস্থানে গাছের সঙ্গে ঝুলতে দেখে স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
অন্যদিকে, ওয়ারী থানার এসআই শাহজাহান মিয়া বলেন, অজ্ঞাতপরিচয় নারী ভবঘুরে ছিলেন বলে জানতে পেরেছি। তিনি কয়েকদিন ধরে ওয়ারী থানাধীন ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কের ভেতরে ছিলেন। সেখানে অসুস্থতাজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ইবাংলা/ নাঈম/ ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২