পচা-বাসি খাবার পরিবেশন ইবি স্ন্যাকসে

ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রধান ফটকের সম্মুখ সংলগ্ন রেস্টুরেন্ট ‘ইবি স্ন্যাকস’-এর বিরুদ্ধে পচা-বাসি খাবার পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ ব্যাক্তিদের আলাদা করে ভালো খাবার দেয়া হলেও অপরিচিত শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে পচা-বাসি খাবার। না জেনে-বুঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী তা খাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবির হোসেন জানান, বাইরে থেকে আমার কিছু গেস্ট এসেছিলো। শনিবার (১৯ তারিখ) ভালো খাবারের আশায় ইবি স্ন্যাকসে যায়। সেখান থেকে ৬টা স্যান্ডউইচ টোস্ট কিনি। যার মধ্যে ৫টিই ছিলো খাবার অযোগ্য এবং তার মধ্যে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছিলো

তিনি আরও বলেন, আমি চিকেন ভেজিটেবল রোল চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে বলছিলো স্যান্ডউইচ টোস্ট নিতে। কথা বলার একপর্যায়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বুঝতে পেরে শুধু একটাই ভালো স্যান্ডউইচ টোস্ট দেয়া হয়। বাকিগুলো ছিলো খাবার অযোগ্য। মনে হয় কয়েকদিন আগের সেটা। পরে রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে বললে তারা বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে।

রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, গরমের কারণে এমন হতে পারে। এ ছাড়া অন্য দিনের খাবার ভুল ক্রমে চলে আসতে পারে। পরবর্তীতে এমন ভুল না করার চেষ্টা করবো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ‘ইবি স্ন্যাকস’-এ স্যান্ডউইচ, বার্গার, বিরানী, সবজী রোল, চিকেন রোল ও জন্মদিনের কেক সহ বিভিন্ন আইটেমের খাবার সামগ্রী পাওয়া যায়,। অভিযোগ উঠেছে, রেস্টুরেন্টটিতে পচা-বাসি কোন খাবারই ফেলে দেয়া হয় না। কৌশলে পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন জনের কাছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা ও পরিচিতজনদের মাঝে ভাল খাবার পরিবেশন করা হলেও অপরিচিত ও শিক্ষার্থীদের মাঝে এসব খাবার দেওয়া হয়।

এর আগেও বিভিন্ন সময়ে রেস্টুরেন্টটির বিরুদ্ধে নিম্নমানের পঁচা বাসি খাবার পরবেশনের অভিযোগ উঠে। সেসময় তারা ভালো খাবার পরিবেশনের আশ্বাস দিলেও ফের পচা ও বাশি খাবার পরিবেশন করছে তারা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আখতার হোসেন আজাদ বলেন, কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবে খাদ্যসন্ত্রাসীদের তৎপরতা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভোক্তা অধিকার আইন ও নিরাপদ খাদ্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে পারলে খাদ্যে ভেজাল দেয়ার দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিচরণ ক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা না গেলে দেশ মেধাশূন্য জাতিতে পরিণত হবে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী হোটেল সমূহের খাবারের মান চরম নিম্নমানের। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে নিরাপদ খাদ্যের ক্যাম্পাসে পরিণত করা সম্ভব।

এ বিষয়ে সিওয়াইবি ইবি শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরে এবং ভিতরে নিন্মমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। যা খেয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। আমরা সিওয়াইবির পক্ষ থেকে দ্রুতই এসব হোটেল-রেস্টুরেন্টে অভিযান চালাবো। শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে সজাগ থাকা উচিত।

ইবাংলা/ ই/ ২০ ফেব্রুয়ারি,২০২২

ইবিপচা-বাসিপরিবেশনস্ন্যাকসে
Comments (0)
Add Comment